দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ২০১৭ সালে বার্সেলোনা থেকে প্যারিসে পা রেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। লম্বা সময় ক্লাবটিতে খেললেও চোট ও বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারেননি অনেক ম্যাচে। পিএসজির জার্সিতে ম্যাচ খেলার ‘শতক’ পূর্ণ করেছেন ২০২১ সালে। মাঠের বাইরে থাকার ‘শতকও’ পূর্ণ করেছেন বছরখানেক আগে। এবার সেটা ছড়িয়ে গেলেন তারকা ফরোয়ার্ড।
চোট ‘নিত্যসঙ্গী’ হয়ে দাঁড়ানোয় নিয়মিতভাবে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে নেইমারকে। পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর ১৭৩ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ১১৮টি। গোল করিয়েছেন ৭৭টি। ব্রাজিলিয়ান তারকার মাঠের বাইরে থাকার সংখ্যাও কম নয়। লিগ ওয়ানে লিলের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে খেলেছিলেন ফরাসি ক্লাবটির জার্সিতে। সেই ম্যাচে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে সেলেসাও তারকা। মিস করেছেন মার্শেই ম্যাচ। সবমিলিয়ে ফরাসি জায়ান্টদের জার্সিতে ১০১ ম্যাচ খেলতে পারেননি ৩১ বর্ষী তারকা।
২০১৭ সালের আগস্টে পিএসজিতে নাম লেখানোর পরের মাসেই চোট পান নেইমার। ৪ দিনের বিশ্রামে খেলতে পারেননি ১টি ম্যাচ। একইবছর নভেম্বরে চোট পেয়ে ১১ দিন ছিলেন বাইরে। সেবারও মিস করেছেন ১ ম্যাচ। দুইমাস পর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দুই দফা চোট পান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। প্রথম দফায় মাঠের বাইরে ছিলেন ৪ দিন, দ্বিতীয় দফায় ৬ দিন। সেসময়ে মিস করছেন মোট ৩ ম্যাচ।
পরের মাসে পায়ের পাতার হাড় ভেঙ্গে মাঠের বাইরে ছিলেন লম্বা সময়। তিন মাসের অধিক সময় বিশ্রামে থেকে খেলতে পারেননি ১৬ ম্যাচ। একইবছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বিশ্রামে থেকে খেলেননি দুই ম্যাচ। নভেম্বর-ডিসেম্বরে পেশীর চোটে দুই দফায় মাঠের বাইরে ছিলেন ২৫ দিন। মিস করেছেন ৫ ম্যাচ।
২০১৯ সালের জানুয়ারির শুরুর দিকে ছুটি নিয়ে দলের সঙ্গে ছিলেন না ১ ম্যাচ। ছুটি থেকে ফেরার পর ২৪ জানুয়ারি পায়ের পাতার হাড় ভেঙ্গে তিনমাসের জন্য চলে যান মাঠের বাইরে। খেলতে পারেননি ১৮ ম্যাচ। জুনে গোড়ালির চোটে আবারও দল থেকে ছিটকে যান নেইমার। প্রায় ২ মাস পর চোট সেরে উঠলেও ফিটনেস জটিলতা কাটিয়ে মাঠে ফেরেন সেপ্টেম্বরে। সে দফায় মিস করেছেন ৫ ম্যাচ।
পরের মাসেই হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে একমাসেরও বেশি সময় ছিলেন মাঠের বাইরে। মিস করেছেন ৬ ম্যাচ। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁজরে চোট পেয়ে খেলতে পারেননি ৪ ম্যাচ। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দুই দফায় চোট পেয়েছিলেন সেলেসাও তারকা। চোট, বিশ্রাম ও করোনা ভাইরাসের কারণে সে সময়গুলোতে খেলতে পারেননি মোট ১১ ম্যাচ।
ফেব্রুয়ারিতে পেশীতে চোট পেয়ে নেইমার মাঠ ছাড়েন এক মাসেরও বেশি সময়ের জন্য। খেলতে পারেননি ৯ ম্যাচ। আগস্টে ফিটনেস জটিলতায় দলের বাইরে ছিলেন ৪ ম্যাচ। অক্টোবরে পেশীর চোটে মিস করেন আরও একটি ম্যাচ। পরের মাসেই গোড়ালিতে চোট পান সেলেসাও তারকা। আড়াই মাসের বিরতিতে খেলতে পারেননি ১৩ ম্যাচ। সেসময় ব্রাজিলিয়ান তারকা পিএসজির জার্সিতে না খেলার শতক পূরণ করেন।
কাতার বিশ্বকাপের সময় গোড়ালিতে চোট পান নেইমার। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকায় পিএসজির হয়ে মিস করতে হয়নি কোনো ম্যাচ। গত ফেব্রুয়ারিতে লিগ ওয়ানে লিলের বিপক্ষে ম্যাচে পুনরায় গোড়ালিতে চোট পান সেলেসাও তারকা। মিস করেছেন মার্শেই ম্যাচ।
পিএসজির জার্সিতে সর্বমোট ১০১ ম্যাচ খেলতে না পারা নেইমারের চোট সেরে উঠতে কতদিন লাগবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ৫ মার্চ নঁতের বিপক্ষে লিগ ওয়ানের ম্যাচসহ ৯ মার্চ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে নেইমার দলে থাকছেন না তা অনেকটাই নিশ্চিত।