চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নেটফ্লিক্সের ‘ডোন্ট লুক আপ’ কেন আলোচনায়? 

বড়দিনের আগের দিন নেটফ্লিক্সে প্রকাশ পেয়েছে প্রতীক্ষিত তারকাবহুল ছবি ‘ডোন্ট লুক আপ’। ছবিতে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং জেনেফার লরেন্স অভিনয় করেছেন মহাকাশচারীর চরিত্রে। সমালোচক মহলে ছবিটি প্রশংসা না পেলেও দর্শক মহলে সাড়া ফেলেছে।

নেটফ্লিক্সের রেটিং-এর শীর্ষে এখন এই ছবি। সামাজিক মাধ্যমেও ছবিটি নিয়ে চলছে আলোচনা। কেন আলোচনায় ‘ডোন্ট লুক আপ’?

আমেরিকা কিংবা ইউরোপীয় অঞ্চলের সমালোচক ও চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের কাছে ছবিটি একেবারেই ভালো লাগেনি। দুর্দান্ত সব অভিনয়শিল্পী থাকা সত্ত্বেও প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে একই বিষয় বারবার বলা হয়েছে। এতে কারো কারো কাছে একঘেয়ে মনে হয়েছে ছবিটি।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিভিউতে বলা হয়েছে, ‘পুরোপুরি ডিজাস্টার!’ দ্য ডেইলি বিস্টের রিভিউতে বলা হয়েছে ‘এই ছবিতে মজার কিছুই পাওয়া যায়নি।’ রোলিং স্টোন-এ বলা হয়েছে, ‘ডোন্ট লুক আপ… নাহলে দেখবেন সিনেমা নামক বোমা আপনাকে আঘাত করতে আসছে।’ পলিগন-এর রিভিউতে বলা হয়েছে, ‘একেবারেই আনন্দহীন এক অস্বাভাবিক যাত্রা।’ এমনকি গার্ডিয়ানেও সমালোচনা করা হয়েছে ছবির। ‘গাঁজাখুরি গল্প’ মনে হয়েছে জনপ্রিয় গণমাধ্যমটির চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের কাছে।

মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে তাহলে নেটফ্লিক্সের টপ টেনের এক নম্বরে কেন এই ছবি? তার কারণ হতে পারে, ডিক্যাপ্রিও এবং জেনেফার লরেন্সের মতো তারকা আছেন ছবিতে। তাদের কাজের প্রতি ভক্তদের আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। একজন পরিবেশবাদী হিসেবে রূপালি পর্দায়ও পরিবেশ বাঁচানোর যুদ্ধেই অবতীর্ণ হয়েছেন ডিক্যাপ্রিও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দুর্যোগ সম্পর্কে সচেতন করতে দেখা গেছে তাকে।

সাইন্সফিকশন ব্ল্যাক কমেডি ঘরানার এই ছবিতে ডিক্যাপ্রিও একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং নভোচারী। তার ছাত্রী জেনিফার লরেন্স। তারা দুজন বুঝতে পারেন পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে একটি ভয়ংকর ধূমকেতু, যা পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু কেউ তাদের সতর্কবাণী কানে তুলছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দ্বারস্থ হতেও দেখা গেছে তাদের। আরিয়ানা গ্রান্ডের সাথে সাক্ষাৎ, খবরের কাগজের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি, কোনো চেষ্টাই বাদ যায়নি। তবুও ব্যর্থ হন তারা। এক পর্যায়ে তাদের গ্রেপ্তার করে এফবিআই।

অনেকে মনে করছেন ছবির মূল বিষয় পরিবেশ নয়, রাজনীতি। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং জেনিফার লরেন্সকে সরকার ও মিডিয়ার ওপর ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়। অনেকে মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চেয়ে বর্তমান কোভিড ষড়যন্ত্রের সাথে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক এই ছবি।

ছবিতে রাজনীতিবিদদের ‘চরিত্র হনন’ করা হয়েছে; যারা শুধুমাত্র লাভের গন্ধ পেলেই সমস্যায় কান দেন, মিডিয়াকে কটাক্ষ করা হয়েছে, যারা প্রকৃত সমস্যাকে গুরুত্ব দেয় না,  টেক ইন্ডাস্ট্রিকে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে; তারা শুধু লাভ খোঁজে, সমাধান খোঁজে না। শুধু তাই নয়, সমালোচনার তীর থেকে বাদ যাননি বিজ্ঞানীরাও। কারণ, লিওর চরিত্রটি যখন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, তখন তার দাম্ভিকতা বেড়ে যেতে দেখা যায়।

‘ডোন্ট লুক আপ’ এর চিত্রনাট্য লিখেছেন অস্কার বিজয়ী অ্যাডাম ম্যাককে। ছবিটি পরিচালনাও করেছেন তিনি। ডিক্যাপ্রিও ও জেনিফার লরেন্স ছাড়াও ছবিতে আছেন, রব মরগান, মেরিল স্ট্রিপ, ক্রিস ইভান্স, ম্যাথিও পেরি, জোহান হিল, মার্ক রাইলান্স, টাইলের পেরি, রন পের্লম্যান, আরিয়ানা গ্র্যান্ডে, কেট ব্ল্যাঞ্চেট ও হিমেশ প্যাটেল।

ইউরোপ, আমেরিকার দর্শক কিংবা চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছে ছবিটি যেমনই লাগুক না কেন, এশিয়ার দর্শক ও সমালোচকরা ‘ডোন্ট লুক আপ’ নিয়ে এখন পর্যন্ত উচ্ছ্বসিত।