চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-নেপাল শিরোপার মহারণ

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ

দুপুর গড়িয়ে বিকেল, এরপর সন্ধ্যা নামলেই কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গড়াবে বাংলাদেশ-নেপালের শিরোপার মহারণ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে কে হাসবে শেষের হাসি? বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হতে চলা ম্যাচের শেষ বাঁশিতে মিলবে প্রশ্নের উত্তর।

ফাইনালে বাংলাদেশের মেয়েদেরই এগিয়ে রাখছেন কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন। লিগপর্বে ভুটানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পা রাখার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘ফাইনাল অন্যরকম একটা ম্যাচ হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। দুদলই সুযোগ পাবে, যারা কাজে লাগাতে পারবে তারাই সাফল্য পাবে। তবে আমার মনে হয় ফাইনালে আমার মেয়েরা এগিয়ে থাকবে। যেহেতু ফাইনালে উঠেছি, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করবো জয়ের।’

Bkash July

আসরের শুরুটা নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েই করেছে স্বাগতিক দল। গোলরক্ষক রুপনা চাকমার দৃঢ়তায় ভারতকে রুখে দিয়ে গোলশূন্য ড্রয়ে ফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ সহজ করে ফেলেছিল ছোটনের মেয়েরা। শেষে ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা থেকে এক জয় দূরে দাঁড়িয়ে।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হারের পর ভুটানের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়ে নিজেদের আশা জাগিয়ে রাখে হিমালয়ের দেশটি। পরে ভারতের সঙ্গে প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও দারুণ প্রত্যাবর্তনের নজির গড়ে নেপাল। ৩-১ গোলে জিতে সবার আগে নিশ্চিত করে ফাইনালের টিকিট।

Reneta June

টাইগ্রেস অধিনায়ক সামসুন্নাহার জুনিয়রের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে। ভুটানের খেলোয়াড়দের কাছে পাওয়া তার তারকাখ্যাতি নিয়ে চলছে আলোচনা। দলটির বিপক্ষে পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। তার পায়ের জাদুতে মুগ্ধ হলেও সামসুন্নাহারের কাছে এসে ভুটানিরা অসহায় কণ্ঠে বলেছিল, পানি খাও আর গোল দিও না!

কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামের স্মৃতিটা এখনো অনেকের কাছেই টাটকা। নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম গোলটি করে বাংলাদেশকে লিড এনে দিয়েছিলেন সামসুন্নাহার জুনিয়র। মেয়েদের জাতীয় দল সেই ফাইনালে জিতে সাফের শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরেছিল।

জাতীয় দল তো বটেই, বয়সভিত্তিক দলেও দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে চলেছেন সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লাল-সবুজের দলের অধিনায়ক। আসরে নেপালকে ৩-১ গোলে হারানোর ম্যাচে পেয়েছিলেন গোল। ফাউলের শিকার হয়ে চোটে পড়েন, ফিরে ভারতের বিপক্ষে খেললেও চেনাছন্দে ছিলেন না। ভুটানের সাথে সেই চেনা সামসুন্নাহারকে পাওয়া গেছে। হ্যাটট্রিক করে জয়ে সামনে থেকেই ভূমিকা রাখেন।

টুর্নামেন্টে ৪ গোল করা দলনেতা অবশ্য ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। ফাইনালের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘দলের জয় নিয়েই ভাবছি। যদি বল পায়ে থাকা অবস্থায় দেখি আমার গোল করার চান্স শতকরা ৫০ ভাগ, আরেকজনের আরও বেশি, তাহলে তাকে দিয়েই গোল করানোর জন্য পাস দেবো।’

অধিনায়কের কথায় স্পষ্ট, কারও একক ঝলকের উপর নির্ভর করে নয়, টিম গেমের কৌশলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরিকল্পনা আঁটছে দল। রক্ষণ ও মধ্যমাঠে ফুটবলারদের বোঝাপড়া সুসংহত। আক্রমণে ফিনিশিংয়ের অভাবটা অবশ্য চলতি আসরে বেশ কয়েকবার নজরে পড়েছে। অফসাইডের ফাঁদে পড়াটাও নিয়মিত ঘটনা। এই জায়গায় উন্নতি ঘটাতে পারলে টোটাল ফুটবল উপহার দিয়ে ট্রফি জয়ের আশা বাংলাদেশ করতেই পারে।

ফাইনাল ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে সেটির প্রস্তুতিও ছোটনের শিষ্যরা নিয়ে রেখেছে। ভুটানের বিপক্ষে শাহেদা আক্তার রিপার পেনাল্টি কিক নিয়ে কথা উঠলে কোচ ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এবারের বিশ্বকাপ যদি দেখে থাকেন, দেখবেন মেসি থেকে শুরু করে সবাই মিস করেছে।’

বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ নেপালও। অধিনায়ক প্রীতি রায় ফাইনাল বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন। আত্মবিশ্বাসও রাখছেন শিরোপার, ‘ফাইনালটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে। আমাদের কষ্টের ফল পাব আশা করি।’

ভারতকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিতের পর নেপালের কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং বলেছিলেন, ‘তারা কেমন খেলে আমরা জানি। বাংলাদেশ ভালো দল হলেও আমরা তাদের চেয়ে ভালো দল। সম্ভবত তারা ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাবে।’

ফাইনালের আগের সংবাদ সম্মেলনে নেপাল কোচ সরাসরিই বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে নিতে চান প্রতিশোধ।’ কথার লড়াইয়ে না জড়িয়ে অবশ্য তার উল্টো পথে হেঁটে লাল-সবুজের দলের কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন প্রতিপক্ষকে সমীহই করছেন। বলেছেন, ‘ঘরের মাঠে শিরোপা জয়ের প্রত্যাশার কথা।’

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View