শাদাব-ইফতেখারদের ব্যাটে পাকিস্তানের ছোঁড়া ১৮৬ রানের লক্ষ্য বৃষ্টিতে কমে দাঁড়ায় ১৪২ রানে। বৃষ্টি বাধার পর ১৪ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ। শুরুতে ৯ ওভারে ৬৯ রান তুলেছিল সাউথ আফ্রিকা। পরিবর্তিত লক্ষ্য ১৪২ রান। ৬ উইকেট হাতে রেখে মাঠে ফিরে প্রোটিয়ারা বেশিদূর এগোতে পারেনি। শাহিন-নাসিমের তোপে ৯ উইকেট হারানো বাভুমার দল তুলতে পারে ১০৮ রান।
সিডনিতে বৃষ্টি আইনে প্রোটিয়াদের ৩৩ রানের হার জমিয়ে তুলেছে পয়েন্ট টেবিল। গ্রুপ ২-এ শীর্ষ থেকে চার অর্থাৎ ভারত, সাউথ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান— সবদলের সামনেই এখন সেরা চারে যাওয়ার সুযোগ। সেক্ষেত্রে খানিকটা এগিয়ে কেবল রোহিত শর্মার দল। অনেক হিসাবের ভারে থাকলেও সুযোগ আছে সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশেরও।
সেমির পথে থাকা চার দলের সবারই বাকি একটি করে ম্যাচ। গ্রুপ ‘২’এ শীর্ষের ভারত ৪ ম্যাচে তুলেছে ৬ পয়েন্ট। মেলবোর্নে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লড়বে তারা। প্রোটিয়ারা মুখোমুখি হবে টেবিলের তলানিতে থাকা নেদারল্যান্ডসের। রানরেটে এগিয়ে থাকা বাভুমার দলের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান লড়বে টেবিলের সেরা দুইয়ে থাকতে। গ্রুপের তিনটি ম্যাচই হবে একইদিনে, ৬ নভেম্বর।
সিডনিতে বৃষ্টির আগে প্রোটিয়াদের চেপে ধরেছিলেন শাদাব খান-শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১৮৬ রানের বড় লক্ষ্যে প্রোটিয়া ইনফর্ম দুই ব্যাটার কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রুশো ব্যর্থ হন। চারে নামা এইডেন মার্করামকেও দ্রুত ফিরিয়ে দেন শাদাব। দুর্দান্ত শুরু আনা টেম্বা বাভুমাকে ওই ওভারেই সাজঘরের পথ দেখান শাদাব। সাউথ আফ্রিকান অধিনায়ক ১৯ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় খেলেন ৩৬ রানের ক্যামিও ইনিংস।
ইনিংসের ৯ ওভার শেষ হলে সিডনিতে বৃষ্টি নামে। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময়। তখন সমীকরণ দাঁড়িয়েছিল, আর খেলা না হলে বাবর আজমের দল জিতে যাবে ১৫ রানে।
বৃষ্টি বাধার পর কার্টেল ওভারে গড়ায় খেলা। ৪ উইকেট হারানো সাউথ আফ্রিকার সামনে আসে ১৪ ওভারে ১৪২ রানের লক্ষ্য। বড় শটে মনোযোগী হওয়া প্রোটিয়ারা রান তুলতে খাবি খেয়েছেন। বোলিংয়ে দাপট দেখিয়েছেন শাহিন ও নাসিম। ৩ ওভারে ১৪ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন শাহিন। ১৯ রান খরচায় নাসিম ফিরিয়েছেন ত্রিস্তান স্টাবস। বৃষ্টি আগে তোপ দাগা শাদাব ২ ওভারে খরচ করেছেন ১৬ রান।
পরিবর্তিত লক্ষ্যে দারুণ এক ছক্কায় শুরু করেছিলেন স্টাবস। কিন্তু বেশি সময় থাকতে পারেননি। ১৮ বলে ১৮ রানের ইনিংসে বাউন্ডারির মার ওই একটিই। বাকি মিডল ও লোয়ার অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ বলে ২০ রান আনেন মার্করাম।
এর আগে, সিডনিতে বৃহস্পতিবার টস জিতে ১৮৫ রানের বিশাল সংগ্রহ আনেন শাদাব-ইফতেখার। এদিনও ব্যর্থ পাকিস্তানের দুই ওপেনার। বাজে শুরুর ধাক্কা পরে কাটিয়ে তোলে মিডল অর্ডার। প্রোটিয়া বোলারদের শেষ ৫ ওভারে ১৩ গড়ে রান তুলে নেন ব্যাটাররা। ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ওভার শেষে পাকিস্তান থামে দুইশর কাছাকাছি সংগ্রহে।
বাঁচা-মরার ম্যাচে উদ্বোধনী ওভারের চতুর্থ বলে রিজওয়ানকে বোল্ড করেন ওয়েইন পারনেল। ৪ ওভারে ৩১ রান দেয়া পেসার একবারই মাততে পেরেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বুকে হাত দিয়ে করা সেই ট্রেডমার্ক উদযাপনে।
দলীয় ৪ রানে রিজওয়ানকে হারানোর পর রান তোলার গতি কমে আসে পাকিস্তানের। মাত্র ৬ রান করে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। পাওয়ার প্লের ৪.৪ ওভারে ১৫ বল খেলে ফেরেন বাবর। শান মাসুদও হয়েছেন ব্যর্থ।
তিনে নেমে ১১ বলে ঝড় তুলেছিলেন মোহাম্মদ হারিস। ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ২৮ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে ফেরার আগে ইফতেখার খেলেন ৩৫ বলে ৫১ রানের ইনিংস, হাঁকান ৩টি চার ও দুটি ছক্কা।
সাতে নামা শাদাব খান দলকে উপহার দেন সুপারসনিক ইনিংস। ২১ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন এ ডানহাতি। তিন চার ও চার ছক্কার ঝড় থামে ২২ বলে ৫২ রানে। শেষ ৫ ওভারে ৪ উইকেট হারালেও পাকিস্তান তুলে নেয় ৬৫ রান।
সাউথ আফ্রিকার চার পেসারের সঙ্গে এদিন দারুণ শুরু আনেন স্পিনার তাবরিজ শামসি। ৪ ওভারে ৩৬ রানে নেওয়াজকে ফেরান শামসি। দশের উপর গড়ে রান দেয়া নর্টজে শিকার করেছেন ৪টি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন পারনেল ও এনগিডি। দলের সবচেয়ে খরুচে রাবাদা ৪ ওভারে দেন ৪৪ রান, ফেরান ফিফটি করা ইফতেখারকে।