পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ বাংলাদেশের কোচ হওয়ায় নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন দেশের লেগ স্পিনারদের অনেকেই। একসময় তিন ফরম্যাটেই টাইগার জার্সিতে খেলা জুবায়ের হোসেন লিখনের আশা নতুন স্পিন কোচের অধীনে লেগ স্পিনারদের নিয়ে অচিরেই ক্যাম্প আয়োজন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সবসময়ই উপেক্ষিত দেশের লেগ স্পিনাররা। লিখন মনে করেন বোর্ডের অধীনে ক্যাম্প ছাড়া বিকাশ সম্ভব নয়। কেননা লিগে ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকে সীমিত। কারও কারও কপালে জোটে না কোনো ম্যাচও।
সম্প্রতি রিশাদ হোসেন সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে ফেলেছেন। ব্যাটিংটাও ভালো করতে পারায় সুযোগও পাচ্ছেন। অন্যদিকে লিখন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, তানবীর হায়দার হারিয়ে গেছেন।
চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লিখন খেলছেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে। ১০ রাউন্ডের মধ্যে তিনটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বিপ্লব সব ম্যাচে বোলিং পাচ্ছেন না। খেলছেন ব্যাটার হিসেবে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে তিনটি ফিফটি করেছেন।
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের তানবীর একাদশে নিয়মিত হলেও অপেক্ষাকৃত ছোট দলে খেলায় প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন সামান্যই। শুরুতে তারকাসমৃদ্ধ দল আবাহনীতে নাম লেখানো রিশাদের একাদশে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দিয়ে নিয়মিত খেলছেন। জাতীয় দলের সদস্য হওয়ায় আলাদা গুরুত্বও পাচ্ছেন।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে খেলা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের লেগ স্পিনার ওয়াসি সিদ্দিক তিন ম্যাচে বল করতে পেরেছেন মোটে ১০ ওভার। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে সুযোগ পাওয়া আরেক তরুণ লেগ স্পিনার মেহেদী হাসান সোহাগ এখনও অপেক্ষায় প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকের। এমন বাস্তবতায় বিসিবির উদ্যোগ ছাড়া লেগ স্পিনারদের ভবিষ্যত বলা চলে অন্ধকার।
দশ বছর আগে ৬টি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে, একটি টি-টুয়েন্টি খেলার হারিয়ে যাওয়া লিখন এখনও সুযোগ খুঁজছেন জাতীয় দলে ফেরার। ২২টি আন্তর্জাতিক উইকেটের মালিকের অবশ্য রাস্তাটা জানা নেই। ২৮ বছর বয়সী এই লেগি চ্যানেল আই অনলাইনের মুখোমুখি দিলেন নিজের মতামত।
‘পাকিস্তান দল যখন বাংলাদেশে এসেছিল তখন মুশতাক আহমেদ স্যরের সঙ্গে মুশফিক ভাইয়ের মাধ্যমে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছিল টিম হোটেল সোনারগাঁওয়ে। প্রায় এক ঘণ্টা বোলিং নিয়ে কথা বলেছেন উনি। তিনি যত বড় কোচ তত বড়ই মোটিভেটর। অল্পতেই খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করে ফেলেন। তিনি বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ হয়ে আসছেন এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুখবর। কেননা বিদেশি বড় মানের লেগ স্পিনার আমাদের অতীতে কোচ হিসেবে ছিল না। বিসিবি যদি লেগ স্পিনারদের ডেকে একটা ক্যাম্প আয়োজন করে তাহলে অনেক ভালো হবে। এখন রিশাদ জাতীয় দলে খেলছে, এটা খুব ভালো ব্যাপার। কিন্তু একজনের ওপর নির্ভর করলে তো চলবে না। ব্যাকআপ লেগ স্পিনার তো লাগবে। তাদের বের করে আনতে বোর্ডের উদ্যোগের অপেক্ষায় আছি আমরা লেগ স্পিনাররা।’
এদিকে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন স্পিন কোচকে ঘিরে পরিকল্পনার কথা। বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন ‘মুশতাক আহমেদ থাকা অবস্থায় দেশের আনাচে-কানাচে যদি ভালো লেগ স্পিনার থাকে এবং যারা এক্সপোজার পায়নি, তাদের জন্য ট্যালেন্ট হান্ট (স্পিনার হান্ট) করতে পারি সেটা ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে, লেগ স্পিনের ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।’