মহিউদ্দিন মুরাদ, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মাসিম নগরে স্থানীয় সাংবাদিক শাহ মনির পলাশ হত্যা মামলায় দুই আসামীর ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদ। রায়ের সময় দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এই রায় দেন। এছাড়া একই উপজেলার টুমচর এলাকায় শিশু পুত্র মামুন হত্যা মামলায় সৎ বাবা মাকসুদ প্রকাশ মাসুদকে একই আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া দুইটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের আরো ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিউকিউটর মো. জসিম উদ্দিন জানান, সাংবাদিক পলাশ হত্যা মামলায় দুই আসামীর ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর শিশু হত্যা মামলায় সৎ বাবার যাবজ্জীবন কারাদেণ্ডর আদেশ দেয়া হয়। পৃথক এই দুইটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের আরো ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন আদালত।
আদালত ও মামলা সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারী সদর উপজেলার মাসুম নগর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষ হামলায় গুরুতর আহত হন স্থানীয় সাংবাদিক শাহ মনির পলাশ। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথম সদর নোয়াখালী ও পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরের দিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় শাহ মনির পলাশ। পরের দিন সদর থানায় তিনজনকে আসামী আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের বাবা মনিরুল ইসলাম। এরপর ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
অপরদিকে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারী একই উপজেলার টুমচর এলাকায় ১২ বছরের শিশু মামুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। পরের দিন দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে নিহত মামুন হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর একদিন আগে সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন শিশু মামুন। পরে নিহতের মা রাহেনা আক্তার সুমী বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শিশু মামুনের সৎ বাবা মাকুসদ প্রকাশ মাসুদ তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার প্রমান পায়। এরপর একই বছরের ৩ অক্টোবর সৎ বাবা মাকসুদকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। দীর্ঘ শুনানী শেষে প্রায় ৫ বছর পর এই দুই মামলার রায় দেন আদালত।