মানিক রায়: ঝালকাঠিতে বিচারক হত্যার ১৭ বছর দিবস পালন করেছে বিচার বিভাগ। এই উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা জজ আদালত চত্বর থেকে একটি শোকর্যালি বের হয়। র্যালিটি শহীদ সোহেল-জগন্নাথ সড়কের ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের আত্মার শান্তির কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
এসময় জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল জজ এম এ হামিদ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. পারভেজ শাহারিয়া, জেলা প্রশাসক ফারাহ্গুল নিঝুম, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাসুদুর রহমান, পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন, সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান রসুল ও সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন বাকলাইসহ বিচারবিভাগের বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্য এবং জজ আদালতের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১০টায় শহীদ সোহেল-জগন্নাথ মিলনায়তনে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জেলা জজ আদালতের কর্মচারী ঘটনাকালীন তৎকালীন গাড়ি চালক সুলতান হোসেন খান ও প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারী মুজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
২০০৫ সালে ১৪ নভেম্বর সকাল ৯টায় ঝালকাঠির আদালতে আসার পথে বিচারকদের বাসভবনের পাশে জেএমবির বোমা হামলায় সিনিয়র সহকারি জজ সোহেল আহম্মেদ জগন্নাথ পাড়ে নিহত হন। আহত হয় আরও ৪জন। পরবর্তীতে এই ঘটনায় গাড়িচালক সুলতান হোসেন খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সিআইডি মামলা তদন্ত করে। এই ঘটনায় বোমা হামলাকারী জেএমবি আত্মঘাতী দলের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন ঘটনার সময় আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার হয় এবং ধারাবাহিকভাবে জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান (বাংলা ভাই), আতাউর রহমান সানী, আব্দুল আওয়াল, খালিদ সাইফুল্লাহ এই শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হয় এবং ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের উপস্থিতিতে বিচারে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। হাইকোর্টে শুনানী শেষে তাদের বিচার কার্যকর হয়।
ঝালকাঠিতে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জেলা জজ আদালত ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিফলকে পুষ্প স্তবক অর্পণ করে এবং সোহেল-জগন্নাথ মিলনায়তনে স্মরণসভার আয়োজন করে আসছে।