পাকিস্তান-চীন সীমান্তে অবস্থিত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কে-টুতে স্বল্পতম সময়ে আরোহণের সময় নরওয়েজিয়ান পর্বতারোহী এবং তার দলের বিরুদ্ধে আহত সহযোগী গাইডকে সহযোগিতা না করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে তা অস্বীকার করেছেন নরওয়েজিয়ান পর্বতারোহী ক্রিস্টিন হরিলা ও তার দল।
শনিবার ১২ আগস্ট ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত থেকে ছিটকে পড়েছিলেন মোহাম্মদ হাসান নামের ওই সহযোগী। সে সময় তাকে তার দলের অন্য সদস্যরা সহযোগিতা না করে পাশ কাটিয়ে পর্বতে উঠে যান। এর কয়েক ঘণ্টা পরই হাসানের মৃত্যু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, হাসানের সহাযোগিতায় চলতে থাকা আরোহণকারী দলটি হাসান আহত অবস্থায় পরে থাকা অবস্থায় তার পাশ দিয়ে একে একে হেঁটে যাচ্ছেন ।
তবে নরওয়েজিয়ান দলের সদস্য হরিলা বলেন, তিনি এবং তার দল হাসানকে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। তার দল হাসানের কাছে একটি দড়ি বেঁধে তাকে অক্সিজেন এবং গরম জল দিতে দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তার দলের সদস্যরা হাসানকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাকে সংকীর্ণ পথে নামানো ‘সম্ভব’ হয়নি দাবি করেন তিনি। সেখানে অন্যান্য পর্বতরোহীর ভিড় থাকায়ও তাকে সাহায্য করতে সমস্যা হচ্ছিল জানান তিনি। ‘এটি ছিল একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনায় হাসান ছাড়াও আরো ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন জানান হরিলা।
তবে অস্ট্রিয়ার দুই পর্বতারোহী ফিলিপ ফ্ল্যামিগ ও উইলহেলম স্টেইন্ডল এই ঘটনার একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ওতে দেখা যায়, দলের অন্য সদস্যরা হাসানকে পাশ কাটিয়ে পর্বতারোহণে ব্যস্ত ছিলেন। এছাড়াও তারা একটি ড্রোনের সাহায্যেও কিছু ফুটেজ নিয়েছিলেন তাতে দেখা যায়, একটি লোক জীবিত অবস্থায় সরু রাস্তায় পড়ে আছেন। অন্য আরোহীরা তাকে পাশ কাটিয়ে পর্বতের চূড়ার দিকে এগুচ্ছে। অথচ সেখানে কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান নি। স্টেইন্ডল বলেন, ‘এ ঘটনায় তারা সত্যি হতবাক হয়েছিলেন। খুব কষ্টও পেয়েছিলেন।
নরওয়েজিয়ান সেই দলটি দ্রুততম সময়ে ২৬ হাজার ফুট উঁচু কে-টু পাহাড়ের চূড়া অতিক্রম করে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন। কিন্ত তাদের গাইড হাসানের শেষ রক্ষা হয়নি। ওই দিন অস্ট্রিয়ার দলটিরও পর্বতারোহণের কথা ছিল। কিন্তু বিপজ্জনক আবহাওয়া এবং তুষারপাতের কারণে তা বাতিল করা হয়েছিল।