কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের দেখায় দুদলের লড়াই থেমেছিল গোলশূন্য ড্র-য়ে। মানরক্ষার তৃতীয় স্থান দখলের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে আর পেরে ওঠেনি আফ্রিকার সিংহ খ্যাত মরক্কো। লুকা মদ্রিচদের কাছে রোমাইন-হাকিমিরা মেনেছেন ২-১ গোলের হার। তৃতীয় হয়ে এবার আসর শেষ করেছে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া।
খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দুদলই লড়েছে সেরাটা দিয়ে। ম্যাচের সাত মিনিটে জসকো গ্যাভারিওল ক্রোয়েটদের এগিয়ে দিলে দুই মিনিট পর আশরাফ দারি সমতায় ফেরান মরক্কোকে। ৪২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি আনেন মিলাভ অরসিচ। ইতিহাস গড়া আফ্রিকার দলটিকে থামতে হল চতুর্থ হয়ে, বিশ্বকাপে আফ্রিকান কোনো দেশের এটাই সর্বোচ্চ অর্জন।
সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন শেষ হয় যায় ক্রোয়েশিয়ার। আরেক সেমিতে ফ্রান্সের কাছে হেরে ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করার দৌড় থেকে ছিটকে যায় মরক্কো। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে রোববার লুসেইল স্টেডিয়ামে নামবে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় শুরু হবে ফাইনাল মহারণ।
শনিবার রাতে অধিনায়ক মদ্রিচের বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটি রাঙাতে সবকিছু করেছে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বমঞ্চে আর দেখা যাবে না সময়ের অন্যতম সেরা মিডফিল্ড তারকাকে। বল দখলের লড়াইয়ে সমানে থাকলেও গোলে শটে এগিয়ে ছিল ক্রোয়েটরা। নয়টি শটের চারটিতে পরীক্ষা নিতে পেরেছিল ইয়াসিন বোনোর। বিপরীতে একদম ছেড়ে কথা বলেনি মরক্কো। সাত শটের দুটি রেখেছিল গোলমুখে।

স্পেন, পর্তুগালকে হারিয়ে রূপকথার জন্ম দেয়া মরক্কো চতুর্থ হয়ে থামার আগে লড়েছে শেষ সময় পর্যন্ত। তবে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান গড়ে দিছে প্রথমার্ধের দুই গোল। অবশ্য এদিন শুরুর দশ মিনিটে দুটি গোলের রোমাঞ্চ দেখেছে ফুটবল বিশ্ব।
ম্যাচের সপ্তম মিনিটে মদ্রিচের ফ্রি-কিক ধরে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন গ্যাভারিওল। ইভান পেরিসিচের হেড থেকে বল বানিয়ে আরেকটি হেডে বোনোকে পরাস্ত করেন ক্রোয়েট রক্ষণ তারকা। দুই মিনিট পর সমতায় ফেরে মরক্কো। এবারও ফ্রি-কিক থেকে দুর্দান্ত গোল। হাকিম জিয়েচের বাড়ানো বলে মাথা ঠুকে দেন আশরাফ দারি। তিনিও একজন ডিফেন্ডার।
পরে বারবার আক্রমণের সুফল আসতে চলেছিল ২৯ মিনিটে। অবশ্য বড় সুযোগ তৈরি করেও ঠিকঠাক সমাধান করতে পারেননি জিয়েচ। উল্টো ৪২ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে অ্যাটলাস পর্বতের দেশটি। মরক্কোর রক্ষণে ভুলের সুযোগ নিয়ে জোরাল শটে বল জালে জড়িয়ে দেন মিলাভ অরসিচ।
বিরতির পর সমতায় ফিরতে একের পর এক আক্রমণ চালায় মরক্কো। ক্রোয়েশিয়াও বেশ কয়েকবার সুযোগ তৈরি করে। তবে আর গোল গোল না হলে শেষ অবধি ২-১ ব্যবধানের জয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়ে ক্রোয়েশিয়া। আফ্রিকার কোনো দেশ হিসেবে প্রথমবার সেমি নিশ্চিত করা মরক্কো থামল শীর্ষ চারের চারে থেকে।