সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। চ্যাম্পিয়ন দুদলের লড়াই ছিল, সবার বাড়তি আগ্রহও ছিল। ঘরের মাঠে ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে কিংস।
শুক্রবার কিংস অ্যারেনার ম্যাচটি ইতিহাস গড়েছে। বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের নিজস্ব হোম ভেন্যুতে ফ্লাডলাইটে খেলার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হল। মোহামেডানকে হারানোর পর টেবিলের শীর্ষের কিংসদের ১৮ ম্যাচে পয়েন্ট ৪৯। এক ম্যাচ কম খেলা সাদাকালোরা ১৭ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে।
দিনের আরেক ম্যাচে শেখ জামালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ১৮ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে আকাশী-নীলরা টেবিলের দুইয়ে। বাংলাদেশ পুলিশ ১৭ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে।
কিংস অ্যারেনায় খেলা শুরুর ৭২ সেকেন্ডের মাথায় বসুন্ধরাকে স্তম্ভিত করে লিড নেয় মোহামেডান। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডি অলিভিয়ের লম্বা পাস দেন। দৌড়ে প্রতিপক্ষ বক্সের কাছে গিয়ে বল নেন ইমানুয়েল সানডে। ডিফেন্ডার তারেক কাজী বাধা দেয়ার চেষ্টাও করতে পারেননি। সানডের ডানপ্রান্ত থেকে নেয়া বুলেট শট গোলরক্ষক সাইফুল ইসলামকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়।
সমতায় ফিরতে মোটেও সময় নেয়নি কিংস। দশম মিনিটে শেখ মোরসালিনের বক্সের ভেতর বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে দেরি করেননি মিগুয়েল দামাসেরো। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের সুন্দর ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ১-১।
গোল পাওয়ার পর একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে চলতি আসরের চ্যাম্পিয়ন দলটি। ম্যাচের ২৭ মিনিটে মোরসালিনের ডান পায়ের দূরপাল্লার শট ঠেকান সাদাকালোদের গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপু।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে মোরসালিনের পাসে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার মেহেদী হাসানকে কাটিয়ে বাঁ-পায়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রাকিব হোসেন। বিরতির আগে এগিয়ে যায় কিংস।
৪৭ মিনিটে সানডের শট বাঁ-পোস্টে লাগলে গোলের দারুণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ফেডারেশন কাপ বিজয়ী দলটি। ফিরতি বলে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন আমির হাকিম বাপ্পি। ৫২ মিনিটে রবসনের দূর থেকে নেয়া কিক অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি। কিংসরা ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তাতে।
পাঁচ মিনিট পর ভুল পাসে বল পাওয়া রাকিব কিপার এগিয়ে আসার পর বল জালে জড়াতে পারেনি। খানিক পর মোরসালিনের কিকে বল পোস্ট ঘেঁষে বের হয়! মিগুয়েল দামাসেরোর শট ৬৪ মিনিটে ঠেকান বিপু। ফিরতি শটে মোরসালিন গোল করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়।
পুরো ম্যাচে দুদলের খেলোয়াড়রা বারবার তর্কে জড়াতে থাকেন। ফাউল-পাল্টা ফাউলে ছড়াতে থাকে উত্তেজনা। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রবসন ও মোরসালিনকে ফাউল করেন রাজিব। এসময় বিশ্বনাথ ঘোষ তার দিকে তেড়ে আসেন। রেফারি রাজিবকে হলুদ কার্ড দেখান।
পরে মিগুয়েলের পায়ে আঘাত দেন মোজাফফরফ। সোহেল রানা মোজাফফরফের সঙ্গে তর্কে জড়ান। মোজাফফরফ একপর্যায়ে সোহেল রানার কপালে ঢুস মারলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান। দুদলের ফুটবলারদের ভেতর উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠায় খেলা কিছুক্ষণ বন্ধও ছিল।