মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) আরও ১০ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৩ জনে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।
এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পর্যন্ত বিজিপির ১০৩ জন সেনা পালিয়ে আসার তথ্য জানায় বিজিবি।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। গতকালও থেমে থেমে সীমান্তের ওপার থেকে তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সব মিলিয়ে রাখাইনের দুই পক্ষের সংঘাত বাংলাদেশ সীমান্তে উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে।
মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশকে ক্ষুব্ধ করেছে। এর জেরে আজ মঙ্গলবার ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সীমান্তের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ কড়া প্রতিবাদ জানাবে।
ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ওই ঘটনাটি বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইননমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন: সরকার ওয়াকিবহাল আছে। যেসব মিয়ানমারের বর্ডার পুলিশ বাংলাদেশে চলে এসেছে তাদের মধ্যে কিছু কিছু আহতও আছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে আপাতত একটা স্কুলে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা আলোচনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা সেই আলোচনা করার জন্য এবং তাদেরকে ফেরত পাঠানো বা ফেরত যদি পাঠানো না যায়, তাহলে অন্যান্য ব্যবস্থা কী করা যায় সেটাও হবে। রোববার যেটা হয়েছিল, মর্টার শেলে আমাদের একজন মারা গেছে, ওদেরও একজন মারা গেছে (রোহিঙ্গা)।’
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় চলমান অস্থিরতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করা হয়েছে। পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।