আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সের চলতি আসরের দুই ফাইনালিস্ট নাইজেরিয়া ও কোত দি ভোয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার। চীনের মাঠে এই দু’দলের বিপক্ষে লিওনেল মেসি-অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াদের লড়াইয়ের কথা থাকলেও কিছুটা ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েই ম্যাচ নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
ঘটনার শুরু মূলত ইন্টার মিয়ামির হয়ে মেসির হংকং সফরের পর থকেই। প্রাক মৌসুমে এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে হংকং একাদশের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের দলটি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে সেই ম্যাচে বেঞ্চেই ছিলন ৩৬ বর্ষী মহাতারকা।
হংকংয়ে সেদিন মূল আকর্ষণ ছিল মেসিকে ঘিরে। ৪০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এমনকি ১২ ঘণ্টা ভ্রমণ করেও মেসিকে দেখতে গিয়েছিলেন অনেকে।
৫ হাজার হংকং ডলারের (প্রায় ৬৫০ মার্কিন ডলার) টিকেট কেটে খেলা দেখেছেন অনেকে। মেসিকে সেদিন মাঠে না নামানোয় বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় দর্শকদের। টিকেটের টাকাও ফেরত চেয়েছেন অনেকে।
ম্যাচ শেষে ইন্টার মিয়ামি অবশ্য দাবি করেছে, মেসিকে সেদিন এক মিনিটের জন্যও মাঠে নামানোর অনুমতি দেননি দলের ডাক্তাররা। কিন্তু সে ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় হংকংয়ের মানুষ, ম্যাচের আয়োজক কিংবা হংকং সরকারের কেউই।
হংকংয়ে ইন্টার মিয়ামির ম্যাচটির আয়োজক প্রতিষ্ঠান ট্যাটলার এশিয়া ইনস্টাগ্রামে জানায়, রোববারের ম্যাচে মেসি বেঞ্চে বসে থাকায় সমর্থকরা যে হতাশ হয়েছেন, এতে তারা ‘অনেক কষ্ট পেয়েছেন’ এবং তাদের ‘হৃদয় ভেঙে গেছে।’
ট্যাটলারের অভিযোগ, ‘আমরা যখন জানতে পারলাম যে মেসি খেলতে পারবেন না, আমরা ইন্টার মিয়ামির মালিকপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম যাতে খেলার বাইরেই তাকে (মেসি) বেঞ্চ থেকে মাঠে পাঠানো হয়, যাতে তিনি দর্শকদের অভিবাদন জানাতে পারেন এবং ব্যাখ্যা করতে পারেন কেন তিনি খেলতে পারছেন না। সেটা তিনি করেননি। ব্যাপারটা হলো, মেসি ও সুয়ারেজ যে ৭ ফেব্রুয়ারিতেই জাপানে খেললেন, সেটাকে আমাদের জন্য আরেক দফা অপমানজনক মনে হচ্ছে।’
চোটের জন্য খেলতে না পারায় ম্যাচ শেষে অবশ্য দুঃখ প্রকাশ করেন ইন্টার মিয়ামি অধিনায়ক মেসি ও তার ক্লাব। ম্যাচের আয়োজকরা টিকেটের দামের ৫০ শতাংশ ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলেন। কিন্তু তাতেও শান্ত হয়নি হংকং। ওই ঘটনার প্রভাবই এবার পড়েছে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার প্রীতি ম্যাচের ওপর।
মার্চে চীনের হাংঝুতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার, কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় শুক্রবার ম্যাচটি বাতিল করে দিয়েছে দেশটির ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ। তবে বেইজিংয়ে কোত দি ভোয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি চীন।
বিবৃতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান পরিস্থিতি এবং যে বিষয়গুলো ঘটেছে সেই ইতিমধ্যেই সবাই জানে। এমন একটি পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের মনে হচ্ছে প্রীতি ম্যাচটি আয়োজনের জন্য পরিবেশ যথাযথ নয়। যে কারণে, ম্যাচটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’