সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর জিয়াউল হক জিয়া রাজধানীর আদালত পাড়া থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় দায়িত্বহীনতার অভিযোগে কোর্ট পুলিশের এক ইন্সপেক্টরসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. হারুর অর রশিদ।
ঢাকায় গোয়েন্দা প্রধান ডিআইজি হারুনুর রশিদ বলেছেন, এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে পাঁচ পুলিশকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যে কোন সময় পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
‘আদালত পাড়ার সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা বিভিন্ন ফুটেজ পর্যালোচনা করে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেয়া ঘটনায় জড়িত সহযোগীদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে, একই সঙ্গে কোতোয়ালি থানায় ২০ জঙ্গির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আগে থেকে গ্রেপ্তার থাকা ১০ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা ওই মামলার তদন্ত করছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। পলাতক ২ জঙ্গি ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারে দফায় দফায় অভিযানের কথা বলা হয়েছে। বিমানবন্দর স্থল বন্দর সহ সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পয়েন্টে জঙ্গিদের ছবি পাঠিয়ে তাদের ব্যাপারে সতর্ক করেছে পুলিশ।
গতকাল (২১ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে এসে ২ আসামিকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে হাজির করে হাজত খানায় নেওয়ার সময় চার আসামির মধ্যে দুইজনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ছিনিয়ে নেওয়া আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরের মইনুল হাসান শামীম এবং লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামের আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবের নাম রয়েছে।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সেদিন বিকেলে তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান। চার্জশিটে ৮ জনকে অভিযুক্ত এবং ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।