আট বছরের বেশী সময় সিনেমা থেকে দূরে ছিলেন এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ। গেল ঈদে মুক্তি পাওয়া চয়নিকা চৌধুরীর ‘প্রহেলিকা’র মাধ্যমে বিরতি ভেঙে সিনেমায় তিনি। পাচ্ছেন দর্শকের তুমুল প্রশংসা।
দেশে সফলতার পাশাপাশি ভিনদেশেও মুক্তি পাচ্ছে ‘প্রহেলিকা’। তারই ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। সেখানে মুক্তির আগে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সিডনির শেরাটন হোটেলে।
সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু হয়ে এই অনুষ্ঠান চলে রাত দশটা পর্যন্ত। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন প্রহেলিকা চলচ্চিত্রের অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশক সহযোগী পথ প্রডাকশন এবং দেশি ইভেন্টস। এতে বিভিন্ন অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ কর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টি ব্যক্তিবর্গ।
শুরুতেই মাহফুজ আহমেদ উপস্থিত দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এরপর রাতের খাবারের পাশাপাশি চলে ঘরোয়া আড্ডা। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আহমেদ বলেন, দীর্ঘ আট বছরের বিরতির পর প্রহেলিকার মনা আবার তাঁকে চলচ্চিত্রে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। এজন্য তিনি পরিচালক চয়নিকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, প্রহেলিকার চিত্রনাট্য পড়ার সাথে সাথেই তিনি স্থির করে ফেলেন এতে অভিনয় করার বিষয়টা। তিনি মনে মনে এতদিন যেন ঠিক এমনই একটি চরিত্র খুঁজে ফিরছিলেন। যেখানে নিজেকে ভেঙে আবারও নতুন রূপে আবিষ্কার করবেন।
প্রহেলিকার বিষয় ছাড়াও তিনি বিভিন্ন রকমের প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন সামনে বাংলা সিনেমার সুদিন আসছে। আমরা খেয়াল না করলেও একদল তরুণ প্রজন্ম আমাদের অজান্তেই এই মাধ্যমে এসেছে এবং বিশ্বমানের সব কাজ উপহার দিচ্ছে। এখন আমাদের দেশে অনেক চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র তৈরি হচ্ছে। ওটিটি প্লাটফর্ম সহজলভ্য হয়ে আসাতে এখন আর আপনি চাইলেই দর্শককে আপনার মানহীন চলচ্চিত্র দেখতে বাধ্য করতে পারবেন না। সে রিমোর্টের বোতাম চেপে অন্য দেশের চলচ্চিত্র দেখবে। তিনি বলেন, এখন মানসম্পন্ন কাজ হচ্ছে বলেই ঈদের চলচ্চিত্রগুলো তিন সপ্তাহ পেরিয়ে এখনও দাপটের সঙ্গে হলগুলোতে প্রদর্শিত হচ্ছে।
চলচ্চিত্রের বাজেট বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, একটা ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য একটা বড় বাজেট অবশ্যই পূর্বশর্ত। কিন্তু সেটাই একমাত্র চাবিকাঠি নয়। একটা ভালো চিত্রনাট্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেটা প্রহেলিকা দেখার পর দর্শকেরা উপলব্ধি করতে পারবেন। তিনি ইরান এবং কোরিয়ান চলচ্চিত্রের উদাহরণ টেনে বলেন, চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে ভাষা আসলে কোন বাধা নয়। কারণ বিশ্বব্যাপী এসব দেশের চলচ্চিত্রের ভিউ অনেক বেশি। এখানে চলচ্চিত্রের মানই আসল মানদণ্ড।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন গল্প পেলে তিনি আবারও চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন। আর দীর্ঘ বিরতির পর অভিনয়ে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ যেমন সাঁতার একবার শিখলে কখনোই ভুলে যায় না তেমনি অভিনয় মানুষ একবার শিখলে কখনোই সেটা ভুলে যান না। পাশাপাশি তিনি প্রহেলিকা চলচ্চিত্রের সহশিল্পীদের অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে নায়িকা বুবলীর কথা উল্লেখ করে বলেন দর্শক প্রহেলিকাতে এক অন্য বুবলীকে আবিষ্কার করবেন।
বাংলা চলচ্চিত্রের প্রসারে তিনি প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি বলেন আপনারা হলে এসে বাংলা চলচ্চিত্রগুলো দেখবেন। তাহলে দেখবেন একসময় বাংলা চলচ্চিত্র বিশ্বময় রাজত্ব করবে। ওটিটিতে যতই মুক্তি পাক চলচ্চিত্রের আসল জায়গা হলো সিনেমা হল। তাই তিনি মনে করেন ওটিটির সময়েও দেশের হলগুলো টিকে থাকবে।