নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ অমীমাংসিত থাকায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। দুদলের প্রথম ম্যাচটি ড্র হওয়ায় টাইব্রেকারের মাধ্যমে সিরিজের বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। তাতে বাংলাদেশকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে দুই ম্যাচের ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল সিরিজ জিতে নিয়েছে অতিথি নেপাল।
ফিফা প্রীতি ম্যাচে সচরাচর টাইব্রেকারে সিরিজ নিষ্পত্তির ঘটনার দেখা মেলে না। বাংলাদেশ ও নেপাল দল সিরিজ শুরুর আগেই টাইব্রেকারের মাধ্যমে সিরিজের বিজয়ী নির্ধারণের দরকার পড়লে তাতে হ্যাঁ-বোধক সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল। প্রথম ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য শেষ হওয়ার পর পেনাল্টিশুটে গড়ায়।
প্রথম শটে নেপালের হয়ে সাবিত্রা ভান্ডারি ও বাংলাদেশের হয়ে শামসুন্নাহার সিনিয়র লক্ষ্যভেদ করেন। হীরা কুমারী দ্বিতীয় শটে বল জালে জড়ালেও স্বাগতিকদের শিউলি আজিমের শট প্রতিহত করেন নেপালের বদলি গোলরক্ষক অঞ্জনা রানা মাগার।
এরপর গোলরক্ষক অঞ্জনা নিজেই নেন শট, বল বাঁ-দিকের বারে লেগে ফিরলে বাংলাদেশের আশা টিকে থাকে। পরে মারিয়া মান্দার শট ডানে ঝাঁপিয়ে সেভ করেন নেপাল গোলরক্ষক।
চতুর্থ শটে দীপা শাহী ও মনিকা চাকমা নিশানাভেদ করেন। শেষ শটে আনিতা কেসি বল জালে প্রবেশ করালে নেপাল জয়ের আনন্দে মাতে। বাংলাদেশের ফুটবলাররা মাঠে হতাশা নিয়ে বসে পড়েন।
এর আগে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরুর একাদশ অপরিবর্তিত রাখে বাংলাদেশ। চতুর্থ মিনিটেই গোলের দেখা পেতে পারতো নতুন কোচ লিটুর দল। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের বক্সের বাইরে থেকে নেয়া ফ্রি-কিক উপরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলেও এসেছিল গোলের সুযোগ। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা জটলার ভেতর বল ক্লিয়ারের সময় রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজান।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে অতিথি দলের আনিতা বাসনেত সতীর্থের পাস নিয়ে বক্সে ঢুকলেও অফসাইডের ফাঁদে পড়েন। মিনিট আটেক পর প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিক ডিফেন্ডার আফিদা খন্দকার।
খেলার ২৯ মিনিটে বাংলাদেশের লিড পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়। বক্সের ঠিক সামনে তহুরা খাতুনের স্কয়ার পাসে বল পান সানজিদা আক্তার। প্লেসিং শটে সানজিদা অনায়াসে বল জালে জড়াতে পারতেন। ব্যাক হিল করতে গিয়ে করে বসেন গড়বড়।
মারিয়া মান্দার সামনেও এসেছিল গোলের সুযোগ। ৩৬ মিনিটে বল নিয়ে অনেকটা এগিয়ে বক্সে ঢুকেও পড়েছিলেন। তাকে শেষ মুহূর্তে বাধা দেন অমৃতা জাইসি। বল গোল লাইনের বাইরে চলে যায়।
ম্যাচের ৪৪ মিনিটে সাবিত্রা ভান্ডারির শট সেভ করে স্বাগতিকদের জাল অক্ষত রাখেন রূপনা চাকমা। গোলশূন্য শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতির পর বাংলাদেশ দলে তিনটি পরিবর্তন আনেন কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু। তহুরার বদলে মাতসুশিমা সুমাইয়া, সানজিদার জায়গায় শাহেদা আক্তার রিপা ও কৃষ্ণা রানী সরকারের পরিবর্তে ঋতুপর্ণা চাকমা মাঠে নামেন।
ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে পড়া ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ঋতুপর্ণা বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বক্সে প্রবেশ করলেও সময়মতো রিপার দিকে কাট ব্যাকে ব্যর্থ হন। ৭২ মিনিটে সাবিত্রার ক্রস রূপনা ধরতে সক্ষম হন। ১০ মিনিট পর সেই সাবিত্রার নেয়া দূরপাল্লার ফ্রি-কিক খানিকটা লাফিয়ে বাংলাদেশের গোলরক্ষক বল গ্লাভসে লুফে নেন।
ম্যাচের ৮৮ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সাথী বিশ্বাসের শট ঋতুপর্ণা বলের লাইনে থেকে গ্রিপ করেন। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে নেপালের গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামেন অঞ্জনা রানা মাগার। টাইব্রেকারে ঝলক দেখিয়ে বনে যান নেপালের জয়ের আসল চরিত্র।