‘সত্যিকার অর্থে নেপালের সঙ্গে যখন সাফে খেলেছিলাম, তখন তাদের পারফরম্যান্স আরও ভালো ছিল। আমাদের মেয়েদের ১০ মাস না খেলার যে প্রভাব ছিল মাঠে, আপনারা তা দেখেছেন। ম্যাচ না খেলার ঘাটতিটা দেখা গেছে। মেয়েরা তাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছে। আপনি অনুশীলন করছেন, কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলছেন না, সেটার একটা প্রভাব তো অবশ্যই থাকে।’
নেপালের কাছে টাইব্রেকারে দুই ম্যাচের ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল সিরিজে পরাজয়ের পর কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।
দুদলের প্রথম ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য শেষ হওয়ার পর পেনাল্টিশুটে গড়ায়।
টাইব্রেকারে নিজের শট না নেয়া প্রসঙ্গে সাবিনা বললেন, ‘যারা আগে শট নিতে গিয়েছিল, তারা আমার থেকে ভালো। অধিনায়ক বা সেরা খেলোয়াড় যে সবসময় টাইব্রেকারে ভালো শট নেয়, বিষয়টা তেমন নয়। গতকালও স্যার বলেছিলেন টাইব্রেকার নিয়ে। যারা যারা পরিকল্পনায় ছিল, তারা পেনাল্টি অনুশীলনও করেছিল, কিন্তু আজ হয়নি।’
নেপালকে সাফে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হলেও ১০ মাসে পাল্টেছে পরিস্থিতি। এই দীর্ঘ সময়ে মেয়েদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি। টাকার অভাবে অলিম্পিক বাছাইপর্বে খেলতে যাওয়া হয়নি। কোচের দায়িত্ব ছেড়েছেন গোলাম রব্বানি ছোটন। অবসর নিয়েছেন সাফজয়ী ফুটবলার সাজেদা খাতুন, আনুচিং মগিনি, সিরাত জাহান স্বপ্না। চীনে পাড়ি জমিয়েছেন চৌকস ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন।
শামসুন্নাহার জুনিয়র চোটের কারণে সিরিজে ছিলেন না। ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন চোট নিয়ে খেলেছেন। সিরিজ শুরুর মাত্র পাঁচ দিন আগে ফিট হন তহুরা খাতুন। এমন অগোছালো দল নিয়ে পারাটা কঠিন ছিল বলেই মনে করেন নতুন কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু।
‘সাবিনাও বলে গেছে, আমরা ১০ মাস খেলার মধ্যে ছিলাম না। আপনি শুধু পড়লেন, কিন্তু পরীক্ষা দিলেন না, তাহলে তো কোনো লাভ নেই। রেজাল্ট কী, আপনি নিজেও জানছেন না। আমার মনে হয় বিষয়টা এটাই। আমরা দশ মাস খেলার মধ্যে ছিলাম না, তবে আমি এটাকে অজুহাত হিসেবে বলব না। তাছাড়া মেয়েরা দীর্ঘদিন অনেকে একসাথে নেই এবং একমাস কৃষ্ণা ও মাসুরাকে পাইনি, ওরা ইনজুর্ড ছিল, ফিজিও চেষ্টা করেছে যতদূর ওদের উন্নতি করা যায়। আসলে এত জোড়াতালি দিয়ে হয় না।’
‘এই টিমের প্রতি সবার প্রত্যাশা অনেক, কেননা ওরা আগে প্রতিটি ম্যাচে ভালো করেছে, কিন্তু এই দলটাতে আঁখি নেই, স্বপ্না নাই, ছোট শামসুন্নাহার নাই। আমি যে উপরে উঠে প্রতিপক্ষকে থ্রেড করব, বাকিরা উপরে একা হয়ে গেছে। এই জায়গাগুলোতে যদি আমার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় না থাকে, তাহলে তো একটু ভুগতে হবে। যদি নিয়মিত ম্যাচ খেলতে পারি, তাহলে আমাদের খেলায় উন্নতি হবে।’