ভারতের কৃষকদের সমস্যা নিয়ে চলমান আন্দোলন রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে শেষ হয় কেন্দ্রীয় সরকার এবং কৃষকদের চতুর্থ দফার বৈঠক। এই বৈঠক থেকেও কোনো সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি বলেই জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈঠকে কেন্দ্রের তরফ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে নয়া প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আন্দোলনরত কৃষকদের।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে শস্য বৈচিত্র্যের সঙ্গে জুড়তে চাইছে সরকার। তবে এই প্রস্তাব এখনও পর্যন্ত গ্রহণ বা নাকচ করেননি কৃষকরা।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানান, উভয় পক্ষই এটা মেনে নিয়ে নিয়ে যে কৃষক, সাধারণ মানুষ এবং অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের গতানুগতিক ধারণা ছেড়ে সমাধানসূত্র বের করতে হবে।
পীযূষ গোয়েল বলেন, বৈঠকে কৃষক নেতারা জলস্তর নেমে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই আবহে মন্ত্রী শস্য বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে আসা নতুন প্রস্তাব নিয়ে ভেবে দেখতে সোমবার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন কৃষক নেতারা। তবে মধ্যরাতের বৈঠকের পরে কিষাণ মজদুর মোর্চার আহ্বায়ক সরবন সিং পন্ধের এবং সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং দল্লেওয়াল দাবি করেন, কেন্দ্রের এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। তাও তারা নিজেদের সমর্থকদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করার জন্য সময় চেয়ে নিয়েছেন।
পীযূষ গোয়েল কেন্দ্রের নয়া প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন, ধরুন গম ছেড়ে কৃষকরা যদি ডালের চাষ করেন। তাহলে ভারতকে কম পরিমাণ ডাল আমদানি করতে হবে। দেশের মানুষের চাহিদা মিটবে। জলস্তরের সমস্যা মিটবে।
এদিকে কৃষকদের আশঙ্কা- ডাল বা তুলোর মতো শস্য ফলনে তাদের লোকসানে পড়তে হতে পারে। কারণ এই ফসলগুলির ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেয় না সরকার। তাই তারা এই বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান। এই আবহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রস্তাব দেন, NCCF, NAFED-এর মতো সমবায় সমিতিগুলি পাঁচবছরের জন্য কৃষকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে এবং শস্য বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে কাজ করবে। সেই সময় এই শস্যগুলির ন্যনতম সহায়কমূল্যে কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এই সমবায়গুলি।
অপরদিকে আপাতত ২১ ফেব্রুয়ারির ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই বিষয়ে কৃষক নেতা পন্ধের বলেন, ‘এক-দুদিনের মধ্যে আবার আলোচনায় বসতে পারি আমরা।’
আন্দলোনকারীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে এই বিষয়ে পন্ধের বলেন, কৃষকদের সঙ্গে এই নিয়েও আলোচনা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে তার দাবি, কৃষকরা দিল্লি যাওয়ার জন্যে অগ্রসর হলে সরকার যেন তাদের জন্য পথ ছেড়ে দেয়।