সান্তিয়াগো বার্নাব্যু বড় দুই উপলক্ষের সাক্ষী হয়ে থাকল। ইতিহাসের ২৫০তম এল ক্লাসিকোর আয়োজক হয়ে এমনিতেই ভেন্যুটি আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। তার ওপর এটি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের হোম গ্রাউন্ডের শততম এল ক্লাসিকো। এমন বড় উপলক্ষে স্বাগতিক দর্শকদের হতাশ করেনি রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
৯ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার উপরে কার্লো আনচেলত্তির দল। ২২ পয়েন্টে থাকা বার্সা দুইয়ে নেমেছে। ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
রোববার বাংলাদেশ সময় রাতে হওয়া ম্যাচে রিয়ালের একাদশে ছিলেন না থিবো কর্তোয়া। পিঠের ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারেননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক। তার পরিবর্তে গোলবার সামলান অ্যান্ড্রি লুনিন।
পঞ্চম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার রাফিনহার ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শট লাফিয়ে ধরেন রিয়াল গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর ভিনিসিয়াস জুনিয়রের নেয়া কিক প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের পিঠে লেগে বল মাঠে বাইরে চলে যায়। অল্পের জন্য তখন গোল পায়নি লস ব্লাঙ্কোস।
১২ মিনিটে ঘরের মাঠের দর্শকদের আনন্দে ভাসান করিম বেনজেমা। বার্সেলোনার মিডফিল্ডার সের্জি রবার্তো মাঝমাঠে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া টনি ক্রুসকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। পড়ে যাওয়ার আগে ভিনিসিয়াসকে লক্ষ্য করে বাঁ প্রান্তে লম্বা পাস দেন ক্রুস। বল নিয়ে দৌড়ে যাওয়া ভিনিসিয়াস শট নিলেও দক্ষতার সঙ্গে তা প্রতিহত করেন টের স্টেগান। রিবাউন্ডে বেনজেমা বাঁ পায়ের শটে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন।
টানা পাঁচ ম্যাচ পর জালের দেখা পাওয়া ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার এই নিয়ে এল ক্লাসিকোতে ১১ গোল করলেন। তিনি এখন সাবেক বার্সা তারকা লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে এল ক্লাসিকোতে যৌথভাবে সর্বাধিক গোলদাতাদের তালিকার নবম স্থানে বসলেন। একইসঙ্গে লা লিগার চলতি মৌসুমে এটি তার চতুর্থ গোল।
২৫ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ পায় বার্সা। রাফিনহার দারুণ ক্রসে পোস্টের একদম মুখে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাঁ পায়ে ঠিকমতো কিক নিতে পারেননি স্ট্রাইকার রবার্ট লেভান্ডোভস্কি।
দশ মিনিট পর মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক আক্রমণ হানে রিয়াল। ফেরল্যান্ড মেন্ডির অ্যাসিস্টে বল নিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন উরুগুইয়ান রাইট উইঙ্গার ফেদেরিকো ভালভার্দে।
খেলার ৪৩ মিনিটের মাথায় সার্জিও বুসকেটসের ফ্রি কিক থেকে বল পাওয়া লেভান্ডোভস্কির হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তাকে কড়া পাহারায় রেখে সফল হন ডিফেন্ডার এডের মিলিতাও।
বিরতির পর ৫১ মিনিটে বেনজেমা আবারো নিশানাভেদ করলেও তা অফসাইডে বাতিল হয়। ভিনিসিয়াস বল বাড়িয়ে দেয়ার সময় বেনজেমা অফসাইড পজিশনে ছিলেন। ৬৯ মিনিটে বেনজেমা আবারো সুযোগ পেলেও তার নেয়া শটটি পোস্টের উপর দিয়ে চলে যায়।
৭৪ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর দানি কারভাহালের হালকা ধাক্কায় পড়ে যায় লেভান্ডোভস্কি। পেনাল্টি না দেয়ায় অসন্তুষ্ট ছিলেন বার্সেলোনার কোচ জাভি হার্নান্দেজ।
চার মিনিট পর গাভির পাসে বল নিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে আনসু ফাতির ডান পায়ে শট নিলেও অল্পের জন্য তা জালে প্রবেশ করেনি। ফলে কাতালান ক্লাবটি আক্ষেপে পোড়ে। পরের মিনিটে লেভান্ডোভস্কির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় আক্ষেপ আরও বাড়ে।
৮৩ মিনিটে গোল পেয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দেয় বার্সেলোনা। ফাতির পাসে বল নিয়ে ব্যাকহিল করেন লেভান্ডোভস্কি। এরপর বাঁ পায়ের নিখুঁত কিকে বল জালে পাঠিয়ে দেন ফেরান তোরেস।
শেষদিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামা রদ্রিগোকে ডি বক্সের ভেতর পায়ে পাড়া দিয়ে বসেন এরিক গার্সিয়া। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে স্পটকিক থেকে রদ্রিগো গোল করে বার্সেলোনার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন।
বার্সার ডাগ আউটে দলটির কোচ হিসেবে নিজের ৫০তম ম্যাচটি হারের হতাশা তিক্ত অভিজ্ঞতা পেলেন জাভি।