অভিনয় ও গানে সুনাম অর্জন করা তারকা কুসুম সিকদারের নামের আগে লাগছে নতুন পরিচয়! তিনি পরিচালক হলেন। পাশাপাশি প্রযোজনাও করলেন। তার পরিচালিত ও প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে ‘শরতের জবা’। গেল নভেম্বরে শুটিংও সম্পন্ন করে ফেলেছেন গুণী এই অভিনেত্রী।
নিজের লেখা বই থেকে এবার সেই গল্পটি চলচ্চিত্রের পর্দায় তুলে আনছেন কুসুম সিকদার। যেখানে ইয়াশ রোহান, জিতু আহসান, শহীদুল আলম সাচ্চু, নরেশ ভূঁইয়াসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে কুসুম সিকদার বললেন, সিনেমা করতে সাহস ও ইচ্ছে লাগে। সবার সাপোর্ট ছিল বলেই হয়তো পেয়েছি। তবে অনেক স্ট্রেস নিয়ে ১৪ দিন শুটিং করেছি। দিনরাত একাকার করে শুটিং করেছি। নড়াইলে আউটডোর শুটিংয়ে বৃষ্টির ভয় ছিল। কিন্তু শুটিং শেষ করে ফেরার পথে বৃষ্টি পেয়েছি। এটা আমার কাছে মিরাকল মনে হয়। এখন পোস্ট প্রডাকশনের কাজ করছি। কোনো ছাড় দিয়ে কাজ করছি না।
কুসুম জানান, তিনি তার সব কাজের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে। এ কারণে তুলনামূলক কম কাজ করেন। বললেন, যখন লাক্স প্রতিযোগিতা থেকে বের হই তারপর থেকে কম কাজ করেছি। আমার জেনারেশনের যারা তাদের তুলনায় কাজ কম। তবে আমি তৃপ্ত যে আমার কাজগুলো মানুষ পছন্দ করেছে। এ কারণে গহীনে শব্দ, লালটিপ, শঙ্খচিল-এর মতো সিনেমাগুলো করতে পেরেছি। অল্প কাজ করলেও দর্শক আমার এই কাজগুলোর কথা সবাই বলে।
কুসুম সিকদার বলেন, আমি মনে করি বেশি কাজ করলে হয়তো স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি নষ্ট হবে। এখন ওটিটিতে খুব ভালো কাজ হচ্ছে। এটিকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। একাধিক নামি নির্মাতা আমাকে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি শিল্পী হিসেবে খুঁতখুঁতে স্বভাবের হওয়ায় দেখা গেছে শেষে সবকিছু যাচাই বাছাই করে ছোট ছোট কিছু সমস্যা থাকায় আর কাজ করা হয়নি। এভাবেই আমি গত দুই দশক কাজ করেছি। এখনও স্বাচ্ছন্দ্য চাই।
সিনেমার মন্দা সময়ে কেন প্রযোজনায় এলেন, অভিনয় বা নির্মাতা ভবিষ্যতে কোথায় স্থায়ী হবেন? কুসুম সিকদারের উত্তর, “নো রিস্ক নো গেইন। কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতে হবে। এই সময়টাই আমি ফিল্ম করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। বাকিটা দেখা যাক কী হয়! আর একটা কথা, এখন আমার ধ্যানজ্ঞান প্রেম সবকিছু ‘শরতের জবা’ ঘিরে। পোস্ট প্রডাকশকের কাজ শেষ করে আগে মুক্তি দেই বাকিটা পরে সিদ্ধান্ত নেব।”
কুসুমের ক্যারিয়ারে অর্জন কম নয়। গৌতম ঘোষের পরিচালনায় প্রসেনজিতের সঙ্গে ‘শঙ্খচিল’ সিনেমায় অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। বললেন, লম্বা ক্যারিয়ারে অভিনয় লেখালিখি গানে অর্জন কম নয়। হয়তো প্রাপ্তি হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি কিন্তু সেইসব অর্জনের নেপথ্যে অনেক সময়, শ্রম ও গল্প আছে। দিনশেষে মানুষ আমাকে পছন্দ করেন এবং এত অর্জন এবং শ্রমগুলো ভাবলে এসব আমাকে নাড়া দেয় এবং নিজেকে লাকি মনে হয়।
কথা প্রসঙ্গে কুসুম সিকদার বলছিলেন, তিনি একেবারে অতিসাধারণ। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে জানেন। দুঃখ কষ্ট নিয়েই মানুষের জীবন। এগুলো ভুলে মিশুক, সবসময় হাসিখুশি থাকেন। একদমই রুপচর্চা করেন না। আনন্দ নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় পার করতে চান।