নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন জানিয়েছেন, তার দেশ প্রথম সামরিক গুপ্তচর স্যাটেলাইট তৈরি করেছে এবং কর্মকর্তাদের তাড়াতাড়ি স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে স্যাটেলাইট স্থাপনের কথা জানালেও উৎক্ষেপণের তারিখ সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানাননি।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) নর্থ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএসূত্রে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নর্থ কোরিয়ার ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিদর্শনের সময় কিম জং বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলা করার জন্য ক্ষমতার বিকাশ জরুরি ছিল। গোয়েন্দা ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট প্রয়োজনীয় ছিল, তাই এটি তৈরি করা হয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বরে কিম জং বলেছিলেন, নর্থ কোরিয়া একটি গুপ্তচর স্যাটেলাইট তৈরি করছে যার চূড়ান্ত পরীক্ষা এই বছরের এপ্রিলের মধ্যে করা হবে।
কিম জং বলেছেন, সামরিক শক্তিকে পরাজিত করতে রিয়েল টাইম তথ্য নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিম জং দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তাদের জোটকে শক্তিশালী করার নামে শত্রুতামূলক সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন বিমানের মতো সামরিক সম্পদ মোতায়েন করে সাউথ কোরিয়াকে আগ্রাসনের একটি উন্নত ঘাঁটি এবং যুদ্ধের অস্ত্রাগারে পরিণত করার চেষ্টা করছে।
নর্থ কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাউথ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের সম্মিলিত মহড়ার প্রসারিত করছে। চলতি সপ্তাহে, তারা প্রায় ১১০টি যুদ্ধবিমান সম্বলিত ১২ দিনের একটি বিমান মহড়া শুরু করেছে এবং জাপানের সাথে একটি একদিনের নৌ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অনুশীলন করেছে।
২০২২ সালে সাউথ কোরিয়া রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে এবং এই বছরের শুরু থেকে প্রায় ৩০টি পরীক্ষা চালিয়েছে। যার একটি বড় কারণ কিম জং দেশের সামরিক শক্তিকে আধুনিকীকরণ ও অগ্রসর করছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নর্থ কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ কোরিয়ার মহড়ার বিষয়ে অভিযোগ করলেও, এটি তাদের সক্ষমতা বাড়াতে এবং ছাড় দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনের উপর চাপ বাড়াতে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করছে।
এই গুপ্ত স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে স্থাপনের জন্য একটি দূরপাল্লার রকেটের প্রয়োজন হবে। কিন্তু এই উৎক্ষেপণগুলোকে জাতিসংঘ কর্তৃক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ এই ধরনের কার্যকলাপকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পরীক্ষা করার একটি আবরণ হিসেবে দেখা হয়।
পিয়ংইয়ং ২০১২ এবং২০১৬ সালে কক্ষপথে তার প্রথম এবং দ্বিতীয় পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট স্থাপন করেছিল। তখন জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো লেখা হয়েছিল। কিন্তু বিদেশী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউই নর্থ কোরিয়ার কাছে কোন নিষেধাজ্ঞা চিত্র পাঠায়নি।