কক্সবাজারের টেকনাফে দূর্বৃত্ত কর্তৃক অপহরণের নাটক সাজিয়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশুকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। সেই শিশুর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে একই মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার মোহাম্মদ এরফান (১৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদার পাড়ার মুহাম্মদ আলী আহমদের ছেলে। সে হ্নীলা দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় কোরআনে হাফেজ বিভাগের ছাত্র। তার বাবা ওই মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল। নিহত শিশু শিক্ষার্থী ফারিহা খানম জেরিন (৯) একই মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তো। নিহত শিশু ও গ্রেপ্তার কিশোর পরস্পর দুঃসম্পর্কের মামা-ভাগ্নি। তারা একই এলাকার বাসিন্দা।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নেব ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।
মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক বলেন, টেকনাফে মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী ফারিহা জান্নাতের (৯) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। ওই শিশুকে খাবারের লোভ দেখিয়ে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেধে ধর্ষণ করে একই মাদ্রাসার আরেক শিক্ষার্থী, নিকটাত্মীয় মো: এরফান। ধর্ষণের একপর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে তাকে নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে মরদেহ মাদ্রাসার পেছনের একটি নালায় ফেলে দেয় এরফান।
মেজর সাদিকুল বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ীর পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ফারিহা খানম জেরিন নামের মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশু নিখোঁজ হয়। পরে রাতে ওই শিশুর মাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। স্বজনরা রাতেই ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। এতে ঘটনাটি র্যাবের নজরে আসার পর রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকালে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় ঘটনায় জড়িত এক ব্যক্তি অবস্থান করছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এসময় মাদ্রাসাটির ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে আত্মগোপন অবস্থায় এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে সাদিকুল বলেন, ফারিহা খানম জেরিন বাড়ির পার্শ্ববর্তী দোকানে যান। এসময় মোহাম্মদ এরফান নাস্তার লোভ দেখিয়ে সু-কৌশলে মাদ্রাসায় তার বাবার অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর সে অফিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে জেরিনের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে এরফান জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রাতে এই ঘটনাটিকে অপহরণের নাটক সাজাতে গ্রেপ্তার মোহাম্মদ এরফান মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নিহত শিশুর মায়ের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। গ্রেপ্তার কিশোরকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান মেজর সাদিকুল হক।