বিদ্রোহীদের সাথে লড়তে রাখাইনের মুসলিম নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর কমান্ডাররা। বৈঠকে সেনা কমান্ডাররা মুসলিম নেতাদের বলেছেন, তারা যদি জান্তা বাহিনীর হয়ে কাজ করতে চায় তাহলে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে।
রাখাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজ জানিয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মংডুর ময়ো থু গি গ্রামের ৫নং বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জান্তার ডিভিশন কমান্ডার থুরিন তুন এবং বিভাগীয় প্রশাসক নায় ও। বৈঠকে স্থানীয় মুসলিম নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
সেখানকার একজন মুসলিম নেতা বলেছেন, বৈঠকে কমান্ডার থুরিন তুন আমাদের বলেছেন, রাখাইনের জনগণের কারণে আমরা মুসলিমরা কষ্ট পাচ্ছি এবং তাই তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্র তুলে ধরতে হবে। তিনি আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন, যদি আমাদের গ্রামের কাছে যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে সেনারা আমাদের গ্রামে হামলা চালাবে না। তারা শুধুমাত্র রাখাইনের গ্রামে হামলা চালাবে। তাই আমরা যেন জান্তার হয়ে কাজ করি।
ওই মুসলিম নেতা আরও বলেছেন, বৈঠকে আমাদের কিছু নেতা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে রাখাইনের মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বেশিরভাগ নেতা। তা সত্ত্বেও সেনা কমান্ডাররা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে তাদের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত মুসলিম নেতারা বলেছেন, যদি তাদের সত্যিকার অর্থে মিয়ানমারের নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হয়, তাহলে তারা এই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবেন। তবে বেশিরভাগ নেতা এতে রাজি হননি। মংডুর পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আরেক অঞ্চল বুচিডংয়েও মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জান্তার কমান্ডাররা। সেখানেও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে রাখাইনে জান্তা বাহিনীর আসন্ন পতনের ব্যাপারে এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীদের জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী রাখাইনে একের পর এক সেনা ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছোট ও বড় ক্যাম্পের সেনারা বিদ্রোহীদের কাছে খুব দ্রুতই আত্মসমর্পণ করবে। যেসব ক্যাম্পের সেনারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি তাদের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা হামলা অব্যাহত রেখেছে।