স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি বলে জানিয়েছেন দেশের কর্মরত সাংবাদিকরা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত জীবনের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন।
১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত “সেফটি অফ জার্নালিস্টস উইদ এ ফেমিনিস্ট অ্যাপ্রোচ” শীর্ষক প্রশিক্ষণে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার ২৭ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
বাংলাদেশের সাংবাদিকরা প্রায়শ শারীরিক হামলা ও হুমকি, আইনি হয়রানি, সেন্সরশিপ এবং নজরদারির মুখোমুখি হন। বিশেষ করে নারী সাংবাদিকরা কর্মক্ষেত্রে এবং কর্মক্ষেত্রের বাইরে প্রায়ই যৌন হয়রানি, হুমকি ও বৈষম্যের শিকার হন। এসকল বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন সাংবাদিকরা।
অনুষ্ঠানে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রুমকি ফারহানা এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও আওতা এবং সাংবাদিকদের বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও দক্ষতা উন্নয়নে আর্টিকেল নাইনটিনের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, নারীবাদী এবং ইনটারসেকশনাল জেন্ডার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য সাংবাদিকদের সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি জরুরী।

গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এর আর্থিক সহযোগিতায়, “ইকুয়ালি সেফ: টুওয়ার্ডস এ ফেমিনিস্ট এজেন্ডা টু দ্য সেফটি অব জার্নালিস্ট “শীর্ষক দক্ষিণ আমেরিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশে পরিচালিত একটি প্রকল্পের অধীনে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল প্রশিক্ষণটি সঞ্চালনা করেন। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা শারীরিক নিরাপত্তা, মানসিক স্বাস্থ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং আইনি নিরাপত্তার পাশাপাশি মহামারী চলাকালীন সময়ে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায় এবং কীভাবে ঝুঁকি মূল্যায়ন করে সাংবাদিকতা করা যায় তার উপর সম্যক ধারণা লাভ করেন। ফ্রিলান্স পরামর্শক সাঈদ আহমাদ, উন্নয়ন পরামর্শক ও প্রশিক্ষক মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম এবং আকলিমা ফেরদৌস এই প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করেন।
আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, “বাংলাদেশে হত্যা, গুম, আইনি হয়রানি, হয়রানি, অপরাধের দায়মুক্তি এবং হুমকিসহ বিভিন্ন কারণে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে নারী সাংবাদিকরা বিভিন্ন দিক থেকে হুমকির মুখে। নির্বাচনের সময় এবং কোভিড ১৯-এর মতো মহামারীতে সাংবাদিকদের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা ঝুঁকি মোকাবেলা করে স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে সক্ষম হবেন।”
আর্টিকেল নাইনটিন একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তা নিশ্চিতে কাজ করে আসছে। সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এর কার্যক্রম শুরু করে।