ইরানের বিপ্লবী আদালত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নার্গেস মোহাম্মদীকে অতিরিক্ত ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। নার্গেস ইতোমধ্যে ১২ বছর কারাগারে একাধিক সাজা ভোগ করেছেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নার্গেস মোহাম্মাদির পরিবার এই রায়ের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ২০২১ সালের মার্চ থেকে এটি তার পঞ্চম দোষী সাব্যস্ত হওয়া।
সর্বশেষ বিচারে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং তার অনুপস্থিতিতে রায় জারি করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
নার্গেস মোহাম্মদী কয়েক দশক ধরে ইরানে মানবাধিকারের জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই সক্রিয়তার কারণে দু’দশক ধরে কারাগারে এবং বাইরে রয়েছেন। তাকে এখন পর্যন্ত ১৩ বার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদীকে।
অতিরিক্ত মাস কারাগারের পাশাপাশি, নতুন সাজা হিসেবে নার্গেসকে তেহরানের বাইরে নির্বাসনে দু’বছর কাটানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হল তার বর্তমান বন্দীর স্থান কুখ্যাত এভিন কারাগার থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
রায়ে আরও বলা হয়, তার সময় কাটানোর পর, মিসেস মোহাম্মদীকে দু’বছরের জন্য বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হবে এবং একই সময়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্যপদ এবং মোবাইল ফোন রাখা থেকে নিষিদ্ধ করা হবে।
৫১ বছর বয়সী এই মানবাধিকার কর্মী অসংখ্য হুমকি এবং গ্রেপ্তার সত্ত্বেও তার কাজ চালিয়ে গেছেন। ইরানে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছেন। তার ছেলে-মেয়েরা অক্টোবরে অসলোর সিটি হলে তার পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
পুরস্কারগ্রহণ অনুষ্ঠানে নার্গেসের সন্তানরা তার পাঠানো এক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে তিনি ইরানের ‘অত্যাচারী’ সরকারের নিন্দা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটি কারাগারের উঁচু, ঠান্ডা দেয়ালের আড়াল থেকে এই বার্তাটি লিখছি। ইরানের জনগণ, অধ্যবসায়ের সাথে, দমন-পীড়ন ও কর্তৃত্ববাদকে জয় করবে।’