চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভের আরও দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

হিজাব বিরোধী বিক্ষোভের সময় আধাসামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে হত্যার দায়ে আরও ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান। শনিবার ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

এই মামলায় ১৩ জন পুরুষ ও তিন নাবালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। এদের সবাইকে সাজা দেয়া হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র মাসুদ সেতাইশি জানিয়েছেন, রুহুল্লা আজামিয়া নামের ওই সেনাকর্মীর মৃত্যু হয় ৩ নভেম্বর। ১৬ জনের একটি দল তাকে ঘিরে ধরেছিল। তাদের পাথর ও ছুরির আঘাতেই মৃত্যু হয় আজামিয়ার।

বিচার বিভাগের সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে মোহাম্মদ মেহেদি কারামি এবং মোহাম্মদ হোসেইনি নামে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আজামিয়ার মৃত্যুর সাথে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কারামি এবং হোসেইনি প্রধান সন্দেহভাজন ছিলেন।

শনিবারের ফাঁসি নিয়ে এই মামলায়ে এখন পর্যন্ত মোট চার জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল। এরআগে গত ডিসেম্বরে মোহসেন শেকারি এবং মাজিদ্রেজা রাহনাভার্ড নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তাদের মাশহাদ শহরে একটি নির্মাণ ক্রেন থেকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। তারা মোহারেবেহ বা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।

এদিকে, অসম্পূর্ণ তদন্তের বরাত দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় আরও তিনজনের আপিল গ্রহণ করেছে। তবে বিভিন্ন মামলায় আরও বেশ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।

হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নামের এক কুর্দি তরুণীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাহসা আমিনি। এর পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় সহিংস বিক্ষোভ। প্রথমে বিক্ষোভ ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে শুরু হলেও ক্রমে তা দেশটির ৮০টি শহর ও নগরে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভটি ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে
ইরান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানের বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে সহিংসতায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

দেশটির বিচার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই ২ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের প্রায় অর্ধেক রাজধানী তেহরানে। যাদের মধ্যে ৭৫০ জনকে সাম্প্রতিক দাঙ্গায় জড়িত থাকার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর দাবি, আমিনির মৃত্যুর পরে অস্থিরতায় প্রায় ১৫ হাজার লোককে আটক করা হয়েছে।