চলতি আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হার্দিক পান্ডিয়া। রোহিত শর্মার কাছ থেকে মুম্বাইয়ের অধিনায়কত্ব সরিয়ে নেয়ায় আসর শুরুর আগেই চটেছিল সমর্থক ও সমালোচকরা। আসরে হার্দিকের নেতৃত্বে ভালো কাটছে না দলটির। প্রথম দুটি ম্যাচেই হেরেছে। এতে মুম্বাই সমর্থক এবং বিশেষজ্ঞদের তোপের মুখে পড়েছেন এই অলরাউন্ডার। বিষয়টি পছন্দ হয়নি হার্দিকের জাতীয় দল সতীর্থ রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। সমর্থকদের এমন আচরণ কারণ হিসেবে এই স্পিন অলরাউন্ডার দায়ী করছেন সিনেমার সংস্কৃতিকে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ২৭৮ রানের লক্ষ্যে নেমে ৩১ রানে হেরে যায় মুম্বাই। ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণীর সময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় দর্শক। জায়ান্ট স্ক্রিন পর্দায় হার্দিকের ছবি ভেসে উঠতেই স্ক্রিন লক্ষ্য করে জুতা, বোতল, বালতিসহ নানা বস্তু ছুঁড়তে থাকে তারা। আসরে টানা দুই হারের পর মুম্বাই সমর্থকরা হার্দিককে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ট্রল করছেন। এমনকি তার স্ত্রী নাতাশার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একাউন্টগুলোতে হানা দিয়েছেন তারা। সেখানে ট্রলের শিকার হচ্ছেন সার্বিয়ান মডেল ও অভিনেত্রী।
পরিস্থিতি প্রতিকুলে থাকা হার্দিকের পাশে দাঁড়িয়েছেন চলতি আসরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলা অশ্বিন। সম্প্রতি একটি ইউটিউব শোতে কথা বলেছেনে হার্দিকের প্রতি সমর্থকদের এমন আচরণ নিয়ে। তার মতে, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স নয়, সমর্থকদের দায়িত্ব এমন আচরণ থেকে বেরিয়ে আসা।
‘তাদের (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স) কোনও ভূমিকা নেই। আমার মতে, এটা সম্পূর্ণভাবে সমর্থকদের দায়িত্ব। লোকে বিরাট কোহলি, এমএস ধোনির কথা বলছে। তারা ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি। কিন্তু যেটা ঘটছে, সেটা খুবই দুঃখজনক। এখন এটাই ক্রিকেট। সব কিছু যেন সিনেমার সংস্কৃতি হয়ে গিয়েছে। জানি, এর মধ্যে ব্যবসা জড়িয়ে আছে। কিন্তু সমর্থকদের মধ্যে লড়াইটা খুবই বাজে বিষয়।’
‘মানুষের মনে রাখা উচিত এই খেলোয়াড়রা কোনো না কোনো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এটা আমাদের দেশ। ফ্যান ওয়ার্সের কখনই এমন কুৎসিত পথ বেছে নেয়া উচিত নয়। অনেকবার বলেছি, এটি সিনেমা সংস্কৃতি, এটি কেবল এখানেই ঘটে।’
‘আমি জানি মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিং এবং পজিশনিং এর মত অনেক কিছু আছে। আমি এটা অস্বীকার করি না, কিন্তু এই মারামারি অন্য কোন দেশে হতে দেখেছেন? উদাহরণস্বরূপ, জো রুট এবং জ্যাক ক্রোলির ভক্তদের মধ্যে মারামারি হয়েছে কখনো, নাকি জো রুট এবং জস বাটলারের সমর্থকদের লড়াই, আপনি কোনোটা দেখেছেন? এটা পাগলাটে আচরণ। অস্ট্রেলিয়ায় স্টিভেন স্মিথের ভক্তদের সঙ্গে প্যাট কামিন্সের ভক্তদের সাথে লড়াই করতে দেখেছেন?’
‘আমি বুঝতে পারছি না। আপনি যদি একজন খেলোয়াড়কে পছন্দ না করেন এবং তাকে যদি গালি দেন তাহলে ক্লাব কেন বেরিয়ে এসে একটি স্পষ্টীকরণ জারি করবে? আমরা এমন আচরণ করছি যা আগে ঘটেনি। সমস্যাটা হচ্ছে, আমরা আনন্দের সাথে বাড়ির ভিতরে বসে বাইরের আবর্জনার দিকে তাকাই। আশা করি এটি আর না করে সমর্থকরা নিজেরাই তুলে নেবে।
সোমবার ওয়াংখেড়েতে অশ্বিনের রাজস্থান রয়্যালসকে আতিথ্য দেবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।