মোহসিন খান নিজের প্রথম ওভারে ছিলেন খরুচে। ঈশান কিষাণ তার বলে হাঁকিয়েছিলেন একটি চার ও একটি ছক্কা। ওভারটিতে মোহসিন দিয়েছিলেন ১৩ রান। শেষ ওভারে মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য যখন প্রয়োজন ১১ রান, বোলিংয়ে এসে মোহসিন পাঁচ রানের বেশি খরচ করলেন না। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ৫ রানের নাটকীয় জয়ে তাতে আইপিএল টেবিলের তিনে উঠে গেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।
১৩ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লক্ষ্ণৌ টেবিলের তৃতীয় স্থানে এসেছে। সমান পয়েন্ট পেলেও রানরেটে এগিয়ে থাকায় দুই নম্বরে চেন্নাই সুপার কিংস। হেরে যাওয়ায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে, ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৪। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা গুজরাট টাইটান্স ১৩ ম্যাচে পেয়েছে ১৮ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার অটল বিহারী বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ৩ উইকেটে ১৭৭ রান করে। জবাবে মুম্বাই ৫ উইকেটে ১৭২ রানে থামতে বাধ্য হয়।
লক্ষ্ণৌর শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। দীপক হুদা ৫, কুইন্টন ডি কক ১৬ এবং প্রেরক মানকড রানের খাতা না খুলে সাজঘরে ফেরেন।
বিপর্যয় সামাল দিয়ে চতুর্থ উইকেটে দারুণ জুটি গড়েন অধিনায়ক ক্রুনাল পান্ডিয়া এবং মার্কাস স্টয়নিস। ৪২ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ৪৯ রান করার পর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রুনাল। লক্ষ্ণৌর স্কোর তখন ১৬ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১১৭ রান।
শেষ চার ওভারে লক্ষ্ণৌ কোনো উইকেট না খুইয়ে তুলে ফেলে ৬০ রান। এরমধ্যে স্টয়নিসের ব্যাট থেকেই ৪৮ রান আসে। অজি ব্যাটার বাইশ গজে আগ্রাসী ব্যাটিং করে ৪৭ বলে ৪টি চার ও ৮ ছক্কায় ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গী নিকোলাস পুরান অপরাজিত থেকে করেন ৮ রান।
মুম্বাইয়ের পক্ষে ৩০ রান দিয়ে দুই উইকেট পান জেসন বেহরেনডর্ফ। অপর উইকেটটি নেন পীয়ূষ চাওলা।
১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা মুম্বাই উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল। ওপেনিং জুটিতে ঈশান কিষাণ ও রোহিত শর্মা ৯০ রানের জুটি গড়েন।
২৫ বলে এক চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রান করা রোহিতের বিদায়ে ভাঙে জুটি। এরপর ড্রেসিংরুমে ফেরেন কিষাণ, করেন ৩৯ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৫৯ রান। দুই ওপেনারের উইকেট তুলে লক্ষ্ণৌকে ম্যাচে রাখেন লেগস্পিনার রবি বিষ্ণোই।
সূর্যকুমার যাদব ৭ এবং নেহাল ওয়াধেরা ১৬ রান করে বিদায় নিলে মুম্বাই চাপে পড়ে। কমতে থাকে রানের গতি। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য দলটির দরকার পড়ে ৩৯ রান।
১৮তম ওভারে বল হাতে নেন ইয়াশ ঠাকুর, পেয়ে যান বিষ্ণু বিনোদের উইকেট। মুম্বাই আরও চাপে পড়ে। সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে ৩০ রান।
নাভিন-উল-হকের করা ১৯তম ওভারের প্রথম বলে রান না এলেও দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারেন টিম ডেভিড। তৃতীয় বলে আসে দুই রান। নাভিন পরের ডেলিভারিটি করতে গিয়ে বল তার হাত থেকে ভারসাম্যহীনভাবে ছুটে যায়। হাই ফুলটস ডেলিভারি, আম্পায়ার দেন নো বলের সংকেত, বল থার্ডম্যান দিয়ে চলে যায় সীমানার বাইরে। ফ্রি হিটে রান নিতে ব্যর্থ হন ডেভিড। পঞ্চম বলটি ডট হলেও ষষ্ঠ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ান ডেভিড। শেষ ছয় বলে মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রান।
শেষ ওভার করতে আসেন মোহসিন খান। অফকাটারে প্রথম বলটি দেন ডট। দ্বিতীয় বলে এক রান নেন ক্যামেরন গ্রিন, ৪ বলে মুম্বাইয়ের দরকার তখন ১০ রান। ডেভিড তৃতীয় বলে এক রানের বেশি নিতে পারেননি। পরের বলটিতে আবারও ডট করেন মোহসিন। গ্রিন পঞ্চম বলে এক রান নিলে জয়ের আগাম উদযাপন শুরু করে লক্ষ্ণৌ। এক বলে তখন মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ৮ রান। শেষ বলে ডেভিড দুই রান নিলে ৫ রানের নাটকীয় জয় পায় লক্ষ্ণৌ।