জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র শতবর্ষ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আয়োজনে আজ মৈমনসিংহ গীতিকা’র ষষ্ঠ পর্বের সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আরও ৫টি পর্বের সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৭ নভেম্বর সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। তিনি বলেন, বাংলা লোকসাহিত্যগুলো সংগ্রহ করে না রাখলে আমরা এর সম্পর্কে জানতে পারতাম না।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাবলেন, দীনেশচন্দ্র সেন যদি এই ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ না লিখতেন, আমাদের মধ্যে তুলে না ধরতেন, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে না পড়তো তাহলে সাহিত্যের মধ্যে লোকসাহিত্যের কী ভূমিকা তা আমরা বুঝতে পারতাম না। লোকসাহিত্য এবং লোক মানুষের সৃষ্টি যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি হয়, যেটা প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয়, নদী-গঙ্গা বেয়ে যাচ্ছে তার ভেতরে কুলকুল শব্দ হয় সেটা কবিরা বুঝেছিলেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আরও বলেন, এই যে গাঙের ঢেউ, গাঙের ঢেউয়ের যে ছন্দ তা আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে। প্রকৃতি থেকে আসা সৃষ্টিশীলতার কথা বলছি, এগুলোই বাংলার সৃষ্টিশীলতা। আমরা যদি ইংরেজি সাহিত্যের কথা বলি, ইটালিয়ানো সাহিত্যের কথা বলি, তখন আমরা যাই কিচ্ছা-কাহিনীর দিকে। যেই কিচ্ছা কাহিনী মিলে বড় ধরনের কাব্য তৈরি হয়। আর তাই বাংলা লোকসাহিত্যে বিদ্যমান।
সেমিনারটি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক আলোচক হিসেবে ছিলেন ভারতের আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক দেবকন্যা সেন এবং ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সেমিনার কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস। এছাড়া আলোচকবৃন্দ হিসেবে ছিলেন বাংলা বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা। এসময় বিভাগীয় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মৈমনসিংহ গীতিকা যাতে ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রচলিত পালাগানগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই গানগুলো প্রাচীন কাল থেকে মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসছে। তবে ১৯২৩ থেকে ১৯৩২ সালে ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন এই গানগুলো অন্যান্যদের সহায়তায় সংগ্রহ করেন এবং স্বীয় সম্পাদনায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রকাশ করেন।