আর্থিক অনিয়মের দায়ে ফিফার দেয়া দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল প্রসঙ্গে আইনজীবীকে নিয়ে বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন বাফুফের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে বেশ চাঙ্গা মেজাজে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। আইনি লড়াইয়ে নির্দোষ প্রমাণে সক্ষম হবেন, এমন প্রত্যাশা তার। সোহাগের আইনজীবীর দাবি, ফিফার দেয়া শাস্তির তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে নিজের আইনজীবী আজমালুল হোসাইনকে নিয়ে উপস্থিত হন সোহাগ। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আপিল করেছি। সেখানেই সবকিছু প্রমাণ হবে। আমি দৃঢ়ভাবে আশা করছি, এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে এসে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারব।’
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফিফার সদর দপ্তর জুরিখে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সোহাগ। সঙ্গে ছিলেন তার আইনজীবী। সেসময়ের ঘটনার বর্ণনা দিলেন, ‘আমরা চাইলে অনলাইনেও শুনানিতে অংশ নিতে পারতাম। আইনজীবীদের পরামর্শে সশরীরে গিয়ে শুনানিতে অংশ নেই। দুই লাগেজ ভর্তি কাগজপত্র নিয়েছেন তারা (আইনজীবী)। জুরিখ গিয়ে তারা সেগুলো সাজিয়েছেন। এতে ফিফা অনেক বিষয়ে অবস্থান পরিবর্তন করে আমাকে সর্বনিম্ন শাস্তি প্রদান করেছেন। প্রধান নির্বাহী হিসেবে আমার উপর দায়িত্ব আসেই।’
সোহাগের আইনজীবী আজমালুল হোসাইন জানিয়েছেন, তারা ফিফাকে বলেছেন, সোহাগের বিষয়ে তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। ফিফার সিদ্ধান্তকে ভুল উল্লেখ করে দেন বিশদ বিবরণ, ‘২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত বাফুফের ক্রয় কমিটি ও নীতিমালা ছিল না। ফিফার নির্দেশেই সকল কিছু হয়েছে। ফলে তাদের প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’
৫ মে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে ফিফার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আপিল করেছেন আজমালুল। আইনি লড়াইয়ে জেতার ব্যাপারে তার কণ্ঠে ছিল আশাবাদের সুর, ‘আমরা যুক্তি ও প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। আশা করি ফলাফল ইতিবাচক হবে।’
কতদিনের মধ্যে আপিলের রায় পাওয়া যাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে বর্ষীয়ান আইনজীবীর ভাষ্য, ‘কয়েকমাস লাগবে। এমনকি বছর গড়িয়ে যেতে পারে।’
এদিকে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আবু নাঈম সোহাগ বলেন, ‘অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন, কিন্তু সেভাবে সাড়া দিতে পারিনি। তাই আমাদের অবস্থান তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত।’
সংবাদ সম্মেলনে অনেক প্রশ্নের উত্তরই সোহাগ দিতে পারেননি, ‘অনেক বিষয়ে এখন মন্তব্য করা যাচ্ছে না। আমি আপিল করেছি, এখন মন্তব্য করলে তখন আবার ফিফা বলতে পারে কেন মন্তব্য করলাম।’
‘আমি আজ এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছি কেবল এটা জানানোর জন্য যে, আমি নির্দোষ এবং এই নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদককে বারবার প্রশ্ন করা হচ্ছিল, আপনি নির্দোষ কিনা। সরাসরি এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বলেন, ‘সময় সবকিছুর উত্তর দেবে। ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে ফুটবলকে ভালোবেসেই ফুটবল ফেডারেশনে কাজ করেছি৷ অনেকে বলেছে রাত ১টা পর্যন্ত বাফুফে ভবনে থেকেছি কেন? তখন কাজ করেছি এসব নিয়েই। পাঁচ বছরের অনেক ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেছি।’