ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুজান স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ শেষে সংঘর্ষ ও পদদলিত হয়ে নিহত ১৭৪ জনের মধ্যে রয়েছে ৩২ শিশু। নিহত হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। আহত কমপক্ষে ৩২০ জন।
আরেমা এফসি নামের একটি ফুটবল ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বী পার্সেবায়া সুরাবায়ার কাছে হেরে যাওয়ার পর শুরু হয় সংঘর্ষ। ম্যাচে আরেমাকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বী পেরসেবায়া।
পূর্ব জাভার স্টেডিয়ামটিতে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ার পর ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ সময় হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে এবং শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয় অনেকের।
আক্রমণকারী সমর্থকদের উপর পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করার প্রেক্ষিতে প্রায় ১৮ জন অফিসারের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ অবিরাম ও দ্রুত অসংখ্য টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
স্টেডিয়ামের ভিডিওতে দেখা গেছে, রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর পর অনেকেই মাঠের দিকে ছুটে আসে এবং জবাবে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ে।
পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিন্তা বলছেন, পরিস্থিতি নৈরাজ্যকর হয়ে উঠেছিল। তারা অফিসারদের উপর হামলা শুরু করে, গাড়ির ক্ষতি করে। আমরা বলতে চাই যে তারা সবাই নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ছিল না। মাত্র তিন হাজার লোক মাঠে প্রবেশ করেছিল।
পুলিশের মুখপাত্র দেদি প্রসেতিও বলেছেন, তদন্তাধীন অফিসাররা অস্ত্রগুলো ধারণের জন্য দায়ী। একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়ক দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ফিল্ড সিকিউরিটি টিমসহ আরও বেশ কয়েকজন অফিসার এবং ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল লিগের কিছু কর্মকর্তাও তদন্তাধীন আছেন।
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশন বলছে, তারা এমন বিপর্যয়ের বিষয়ে নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করবে। রাষ্ট্রপতি জোকো উইডোডো নির্দেশ দিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ লিগের সব খেলা বন্ধ রাখতে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নিরস্ত্র জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের প্রতিক্রিয়া ছিল রাষ্ট্র কর্তৃক অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ। গত রোববার রাতে রাজধানী জাকার্তায় বিক্ষোভকারীরা ‘পুলিশের বর্বরতা বন্ধ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেছে।
ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রী মাহফুদ এমডি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতার বেশি দর্শক ছিল। ৩৮ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে ৪২ হাজারেরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছিল।