দীপক হুদার ১০৪ ও সাঞ্জু স্যামসনের ৭৭ রানের ইনিংসে ভর করে টসে জিতে আগে ব্যাট করা ভারত স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ৭ উইকেটে ২২৫ রান। তখন কারোর কল্পনাতেও ছিল না এমন অবস্থায় জয়ের কাছে পৌঁছে যাবে আয়ারল্যান্ড।
শেষ বলে তখন দরকার ছিল ৬ রান। উমরান মালিকের বলে মার্ক অ্যাডাইর ১ রানের বেশি তুলতে না পারায় ৫ উইকেটে ২২১ রানে থামে আইরিশরা। ৪ রানে হারলেও হৃদয় জিতেই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
মঙ্গলবার ডাবলিনে হওয়া ম্যাচে বড় সংগ্রহ পেলেও ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনিংয়ে নামা উইকেটরক্ষক ব্যাটার ঈশান কিষাণ ৩ রান করেই ক্রিজ ছাড়েন। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার স্যামসনকে নিয়ে ঝড় তোলেন হুদা। ১৭৬ রানের বিশাল জুটি গড়ে তারা বিশ্বরেকর্ডের মালিক বনে যান। আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে দ্বিতীয় উইকেটে এটাই সবচেয়ে বেশি রানের জুটি।
অ্যাডাইরের বলে স্যামসন বোল্ড হলে ভাঙে জুটি। মাঠ ছাড়ার আগে ২৭ বর্ষী এই ক্রিকেটার ৪২ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কার মারে খেলেন ৭৭ রানের ইনিংস।
এরপরই ১৮তম ওভারের প্রথম বলে টি-টুয়েন্টিতে সেঞ্চুরি তুলে নেন দীপক হুদা। দুই বল পর সূর্যকুমার যাদব ১৫ রান করে ফেরেন। একই ওভারের জশ লিটলের করা শেষ বলে অ্যান্ডি ৮ ম্যাকব্রাইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হুদা। তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১০৪ রান। ৫৭ বলে ৯ চার, ৬ ছক্কা ও ১৮২.৪৫ স্ট্রাইক রেটে তিনি এই ঝড়ো ইনিংস খেলেন।
হার্দিক পান্ডিয়া ১৩ রানে অপরাজিত থাকলেও দীনেশ কার্তিক, অক্ষর প্যাটেল ও হার্শাল প্যাটেল শূন্য রানে ড্রেসিংরুমে ফিরলে ভারত ২২৫ রানে থামে।
৪ ওভারে ৪২ রান খরচায় অ্যাডাইর নেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট পান জশ লিটল ও ক্রেইগ ইয়াং।
বড় রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোটেও ঘাবড়ে যায়নি আইরিশরা। পাওয়ার প্লে থেকেই তারা দিতে থাকে পাল্টা জবাব। ১৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪০ রান করে ফেলেন পল স্ট্রার্লিং। তিনি রবি বিষ্ণোইয়ের বলে বোল্ড হওয়ার আগে অ্যান্ডি বালবির্নির সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৭২ রান। রানের খাতা না খোলা গ্যারেথ ডেলানি রান আউট হন হার্দিক পান্ডিয়ার দারুণ থ্রোতে, পরের গল্পটা আইরিশ ব্যাটিং ঝড়ের।
৩৭ বলে ৩ চার ও ৫৪ ছক্কায় ৬০ রান করা বালবির্নি হার্শালের হাতে ধরা পড়েন। দলীয় ১৪২ রানের মাথায় লোরকান টাকারের ক্যাচ নেন দ্বাদশ খেলোয়াড় যুজবেন্দ্র চাহাল। টাকারকে শিকার বানিয়ে নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের দেখা পান টিম ইন্ডিয়ার পেস সেনসেশন উমরান মালিক।
হ্যারি টেকটর ৩৯ রান করে রানের গতি কমাতে দেননি। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে জর্জ ডর্করেল ও অ্যাডাইর মারমুখী ব্যাটিংয়ে উত্তেজনার পারদ উপরে উঠিয়ে দেন। হার্শাল প্যাটেলের ১৯তম ওভারে ১৪ রান এলে শেষ ওভারে আইরিশদের দরকার পড়ে ১৭ রান।
উমরান মালিকের শেষ ওভারের প্রথম বলে রান না এলেও পরের বলেই হয় নো বল। ফ্রি হিটে চার মারেন অ্যাডাইর। পরের বলে অ্যাডাইর আবারো চার মারলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ বলে ৮ রান। পরের তিন বল উমরান মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিয়ন্ত্রিত লাইনে করায় পরের ২ বলে ২ রানের বেশি আয়ারল্যান্ড করতে পারেনি। শেষ বলে তাই দরকার ছিল ৬ রান। অ্যাডাইর এক রানের বেশি নিতে না পারায় ভারত ৪ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পায়।