চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রুট-বেয়ারস্টোতে রেকর্ড গড়া জয় ইংল্যান্ডের

এজবাস্টন টেস্টে প্রথম তিনদিন চালকের আসনে ছিল ভারত। চতুর্থ দিনে এসে বদলাতে থাকে ম্যাচের রূপ। ৯২ রানের ব্যবধানে বুমরাহদের ৭ উইকেট তুলে নিয়ে লক্ষ্যটা চারশ’র নিচে রাখে স্বাগতিক দল। পরে কাজের কাজটা করেছেন জনি বেয়ারস্টো ও জো রুট। দুজনের ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে ভারতের ৩৭৮ রানের লক্ষ্য অনায়াসে পেরিয়ে যান বেন স্টোকসরা।

বার্মিংহামে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে ম্যাচসেরা জনি বেয়ারস্টো। যৌথভাবে সিরিজসেরা হয়েছেন জাসপ্রীত বুমরাহ ও জো রুট। সিরিজে ৯ ইনিংসে ১০৫ গড়ে ৭৩৭ রান করেছেন রুট, বল হাতে নিয়েছেন দুটি উইকেট। ২৩ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১২৫ রান তুলে ভারতের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বুমরাহ।

অবিশ্বাস্য জয়ে রেকর্ডের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন রুট-বেয়ারস্টো। ইংল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানতাড়ার রেকর্ড এখন এটিই। ২০১৯ সালে হেডিংলি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৫৯ রান তাড়া করে আগের রেকর্ড গড়েছিল ইংলিশবাহিনী।

টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন বেয়ারস্টো, যা গত ১৪ বছরে করতে পারেননি ইংল্যান্ডের কোনো ক্রিকেটার। সর্বশেষ ২০০৮ সালে ভারতের মাটিতে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস।

এই হারে ইংলিশদের ডেরায় টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হল ভারতের। ২-২ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে ট্রফি ভাগাভাগি করে নিয়েছে দুদল।

গত বছরের আগস্টে শুরু হওয়া সিরিজে প্রথম চার ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ভারত। এরপর করোনার বাধায় বন্ধ হয়ে যায় সিরিজ। বাকী এক ম্যাচের সূচি নির্ধারিত হয় চলতি বছরে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অ্যান্ডারসন-পটসদের তোপে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। প্রথম ইনিংসে দলীয় রান তিনঅঙ্ক ছুঁতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারী দল। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন রিশভ পান্ট ও রবীন্দ্র জাদেজা। তাদের ২২২ রানের জুটিতে আবারও ম্যাচে ফেরে ভারত।

১১১ বলে ১৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে পান্ট আউট হলেও লড়াই চালিয়ে যান জাদেজা। শেষদিকে জাসপ্রীত বুমরাহ ও মোহাম্মদ শামির ক্যামিওতে ৪১৬ রানে থামে সফরকারীদের প্রথম ইনিংস। জাদেজা করেন ১০৪ রান।

জবাবে নেমে প্রতিপক্ষের দেখানো পথেই হাঁটে ইংল্যান্ড। ৮৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিশাল চাপের মুখে পড়ে। সেখান থেকে ইংলিশদের হয়ে একাই লড়াই করেন বেয়ারস্টো। মাঝে স্টোকস ও বিলিংস তাকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। সেঞ্চুরি তুলে বেয়ারস্টো আউট হন ১০৪ রানে। আর ইংলিশদের ইনিংস থামে ২৮৪ রানে। ১৩২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত।

প্রথম ইনিংসের মতো এ ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি সফরকারীদের। স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪ রান যোগ হতে শুভমন গিলকে হারায় ভারত। ৭১ রানের ব্যবধানে আরও ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বুমরাহর দল। চতুর্থ উইকেটে চাপ সামলে নেন পূজারা ও পান্ট। দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৮ রান।

৬৬ রান করে পূজারা আউট হন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে। পরে আয়ার-পান্টের জুটি থেকে আসে ৩৭ রান। কিন্তু পটসের বলে আয়ারের বিদায়ের পর আর দাঁড়াতে পারেনি ভারত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রানে থামে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস। ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭৮ রানের।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেলে শুরু থেকেই স্বাগতিক বোলারদের মনোবল ভাঙতে শুরু করেন ইংলিশ ওপেনাররা। ১০৭ রানে স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন বুমরাহ।

২ রানের ব্যবধানে আরও ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল স্বাগতিক দলটি। চতুর্থ উইকেটে ব্যাটিংয়ে আসেন বেয়ারস্টো। উইকেটের অপর প্রান্তে ছিলেন জো রুট। দুজনে মিলে শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। ৩১৫ বলে ২৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার।

রুট ১৪২ রানে অপরাজিত থাকেন, বেয়ারস্টো মাঠ ছাড়েন ১১৪ রান নিয়ে। দুজনের জুটি চতুর্থ উইকেটে রানতাড়ার জুটির রেকর্ডও গড়েছে।