জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘আমার শহর, আমার খাবার’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এই প্রদর্শনীতে সাপোর্ট ফর মডেলিং, প্ল্যানিং অ্যান্ড ইমপ্রুভিং ঢাকা’স ফুড সিস্টেম (ডিএফএস) প্রকল্পের মাধ্যমে পরিচালিত কার্যক্রমগুলো তুলে ধরা হয়। এই যুগান্তকারী উদ্যোগটির লক্ষ্য ঢাকা বিভাগের চারটি সিটি কর্পোরেশন-ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জের নগর খাদ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা।
প্রদর্শনীটি ৮-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলা একাডেমির ভাস্কর নভেরা গ্যালারিতে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ এর বৃহত্তর ফ্রেমওয়ার্কে এই প্রদর্শনী অবদান রাখবে। ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ একটি দূরদর্শী প্রকল্প যা অ্যাকশন রিসার্চ, প্রমাণভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং একাধিক স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। এই প্রকল্প জাতীয়নীতি এবং অগ্রাধিকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আরও ব্যাপক এবং সমন্বিত নগর খাদ্য ব্যবস্থার অগ্রগতির প্রতিনিধিত্ব করবে।
এফএও প্রজেক্ট ম্যানেজার পেড্রো গারজন ডেলভাক্স বলেন, ‘শহুরে জীবনে খাদ্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমাগত পরিবর্তনশীল এবং ঢাকার মতো দ্রুত অগ্রগতির শহরে এই পরিবর্তন আরও বেশি। এই ‘আমার শহর- আমার খাবার’ সম্পর্ক এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলো মনোরমভাবে চিন্তা করা- আমাদেরকে বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো স্বতন্ত্র এবং সম্মিলিত সিদ্বান্ত নিতে সাহায্য করবে।’
স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও ঢাকার খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যত পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ‘আমার শহর, আমার খাবার’ প্রদর্শনীতে মানচিত্র, ইনফোগ্রাফিক্স এবং ইন্টারেক্টিভ গেমসসহ ডিসপ্লে গুলির একটি কিউরেটেড সেট রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা এই প্রদর্শনী ঢাকার শহুরে খাবারের ল্যান্ডস্কেপ নতুন করে তুলে ধরবে। কাঁচাবাজার, সুপারমার্কেট, খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, এবং শহুরে কৃষিতে জোর দেয়া এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখার জন্য দর্শনার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
পটভূমি
সাপোর্ট ফর মডেলিং, প্ল্যানিং অ্যান্ড ইম্প্রুভিং ঢাকা’স ফুড সিস্টেম (ডিএফএস) প্রকল্পের লক্ষ্য ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ এর উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করা এবং নগর খাদ্য ব্যবস্থাকে আরও অন্তর্ভুক্তমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই করা।কর্ম গবেষণা এবং সহযোগী একাধিক স্টেকহোল্ডারদের অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্ব প্রদান করা। এফএও এবং নেদারল্যান্ডের ওয়াগেনিয়ান ইউনিভার্সিটি এন্ড রিসার্চ (ডব্লিউইউআর) এর কারিগরী সহায়তায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান করছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে নেদারল্যান্ড দূতাবাস।
এখন পর্যন্ত, ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১, শহরের চারটি কর্পোরেশনের খাদ্য সনদের পাশাপাশি একটি প্রশাসনিক কৌশলগত রিসোর্স ডকুমেন্ট হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে। শহরের ১৩০টি কাঁচাবাজারে ২৭০০ জন খাদ্য বিক্রেতা ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত ১৬ টি কৃষকের বাজার তৈরি করা হয়েছে যেখানে কৃষকদের উৎপাদিত তাজা এবং নিরাপদ পণ্য পাওয়া যায়। ঢাকার নগর খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে। জিআইএস এবং অর্থনৈতিক মডেলিং ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড চালু করা হয়েছে। ৬৫০০ জন নগর কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং কৃষি উপকরণ পেয়েছেন। খাদ্য নির্বাচন, ক্রয় এবং নিরাপদ খাদ্য রান্নার বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন ৮৭০০ জন সুবিধাভোগী।
এছাড়াও, হোটেল এবং রেস্তোরাঁর মালিক, বাবুর্চি, কসাই এবং রাস্তার খাবার বিক্রেতাদের খাদ্য নিরাপত্তা, মাংসের নিরাপদ হ্যান্ডলিং এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।