নেতৃস্থানীয় ব্যবসাকে একত্রিত করা এবং বেসরকারি খাতের শিল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত প্রোগ্রাম ‘এক্সসেলারেটিং ক্লাইমেট স্মার্ট এন্ড এম্প: ইনক্লুসিভ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইন সাউথ এশিয়া- এসিএসআইআইএস’ এবং ‘মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এমসিসিআই’ একত্রে ‘নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য অংশীদারিত্ব: ব্যবসার ইক্যুইটি’ নামের একটি ফ্ল্যাগশিপ নেটওয়ার্ক চালু করেছে । দুই বছরের এই অংশীদারিত্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তির জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে এবং সারা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে সহায়তা করবে।
দেশের কর্মশক্তির এক-তৃতীয়াংশ নারী, যেখানে মাত্র ৪ শতাংশ শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন। দায়িত্ব, চাকরিতে অ্যাক্সেস, চলাফেরার সীমাবদ্ধতা এবং সামাজিক নিয়মগুলো হল মহিলাদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণের মূল বাধা। এই লিঙ্গ ব্যবধান বন্ধ করা গেলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৩০ বিলিয়ন ডলার যোগ করতে পারে।
পার্টনারশিপ ফর উইমেন এমপ্লয়মেন্ট, আইএফসি বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম লিড জারিন তাসনিম বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়োজন। অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায় আর্থিক কর্মক্ষমতা, প্রতিভা ধরে রাখা, খ্যাতি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশে প্রথম। কোম্পানির বটম লাইন, উৎপাদনশীলতা এবং প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার সাথে সাথে কর্পোরেট লিঙ্গ ব্যবধান বন্ধ করার বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞানের সাথে ব্যবসাকে সজ্জিত করতে সাহায্য করবে এটি।
বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা যায়, বেসরকারি খাতে মহিলাদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ বৃহত্তর উদ্ভাবন এবং কোম্পানির সংস্কৃতির জন্য ভাল ফলাফল নিয়ে আসে। উদাহরণস্বরূপ, লিঙ্গ বৈচিত্র্যপূর্ণ বোর্ডের কোম্পানিগুলো ইক্যুইটিতে ৫০ শতাংশের বেশি এবং বিনিয়োগের ওপর ৬৫ শতাংশের বেশি রিটার্ন পায়। এই উদ্যোগটি একটি সম্মানজনক এবং সহায়ক কর্মক্ষেত্র তৈরিতে বিশেষ করে কর্মরত পিতামাতার জন্য এবং সবুজ অর্থনীতিতে নারীর উপস্থিতি বাড়ানোর ওপরও জোর দেবে।
বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের রাষ্ট্রদূত ও প্রধান এইচই চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিঙ্গ সমতার অগ্রগতি, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং মহিলাদের জন্য সুযোগের প্রচারে নিবেদিত। একসাথে আমরা সকলের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ গড়ে তুলছি। নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য অংশীদারিত্বের লক্ষ্য তাদের অগ্রগতি এবং ধরে রাখার মাধ্যমে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা এবং সম্মানজনক কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বাধাগুলোকে সক্রিয়ভাবে দূরীকরণে নিযুক্ত করা।
আকিজবশীর গ্রুপ, বাটা বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডিবিএল গ্রুপ, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনার্জিপ্যাক ইলেকট্রনিক্স, ফকির নিটওয়্যারস, ইডকল, আইপিডিসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাণ গ্রুপ, প্রাইম ব্যাংক, সিঙ্গার, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ এবং উর্মি গ্রুপসহ শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির ১ লক্ষ ৪৯ হাজার কর্মী ইতিমধ্যে অংশীদারিত্বে যোগদান করেছে।
এমসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট কামরান টি. রহমান বলেন, নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল, নীতি এবং অনুশীলনের আশেপাশে কোম্পানিগুলোর প্রতিশ্রুতি, পারস্পরিক শিক্ষা এবং পদক্ষেপকে উৎসাহিত করবে।