পাকিস্তানের বিপক্ষে এক রানের অবিস্মরণীয় জয়ে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সমীকরণ জমিয়ে তুলেছে জিম্বাবুয়ে। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৩ উইকেট তুলে ম্যাচসেরা হন সিকান্দার রাজা। এমন পারফরম্যান্সের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল আগেই, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের এক সাক্ষাৎকার দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সফলতা এসেছে, বলেছেন রাজা।
জিম্বাবুয়ে অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘গত রাতে বেশি ঘুমাতে পারিনি। কিভাবে ব্যাট করবো সেটাই মাথায় ঘুরছিল। কয়েকটা নোট তৈরি করেছিলাম এবং সেগুলো বারবার পড়ছিলাম। জিম্বাবুয়ের অনেককিছু শেখার রয়েছে। আমরা শীর্ষ দেশগুলোর সাথে খুব বেশি খেলতে পারি না।’
এরপরই পন্টিংয়ের সাক্ষাৎকারের কথা টেনেছেন রাজা। আইসিসির পেজে সেই আলাপচারিতায় পন্টিং রাজার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। রাজা জিম্বাবুয়ের যোগ্যতা প্রমাণে ভূমিকা রেখে প্রথম রাউন্ডের বাধা পেরোতে সহায়তা করেছেন, সেটি বলেছেন।
‘যখন সকালে ঘুম থেকে উঠি, তখন এক বন্ধু একটি বার্তা পাঠায় এবং বলে, তুমি আইসিসির পেজে একটি ক্লিপ দেখেছে?’
‘ক্লিপ দেখার পর রোমাঞ্চিত ছিলাম। নার্ভাস ছিলাম। আজকেও রোমাঞ্চিত ছিলাম। অনুপ্রেরণা সবসময়ই ছিল। কিন্তু সকালের ক্লিপটি বিস্ময়করভাবে কাজ করেছে। তাই রিকি আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।’
‘কিছু বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা বার্তা পাঠিয়েছিল এবং তারা বলেছিল ক্লিপটি দেখে তাদের চোখে জল ছিল। এই ম্যাচের অন্যতম সেরা দল জিম্বাবুয়ে এবং বিশেষ করে আমার সম্পর্কে তিনি বলেছেন।’
‘এমন নয় যে আমার বাড়তি অনুপ্রেরণা জরুরি ছিল। তবে সেই ভিডিওটি ছিল বিশেষ অনুপ্রেরণা। শান্ত থাকতে চেয়েছিলাম। একইসঙ্গে এই ম্যাচের জন্য রোমাঞ্চিত ছিলাম।’
আইসিসিকে সাক্ষাৎকারে রাজাকে নিয়ে পন্টিং বলেছিলেন, ‘তার বয়স ৩৬ বছর। কিন্তু সে তার চেয়েও বেশি তারুণ্যের উচ্ছ্বাস নিয়ে খেলছে। মনে হচ্ছে সে আবার ২৬ বছর বয়সে ফিরে গেছে। পিচের চারপাশে নিজেকে উপভোগ করছে এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অসাধারণ কয়েকটা বছর কেটেছে। তিনি চাপের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন, যা আপনাকে করতে হবে। যখন বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন, তখন বড় ম্যাচে কীভাবে পারফর্ম করেন তার উপর খেলোয়াড়দের নাম এবং খ্যাতি মূল্যায়ন করা হয়।’
‘তিনি মূলত এককভাবে জিম্বাবুয়েকে বিশ্বকাপে প্রথম স্থানে এনেছিলেন। এই বিশ্বকাপে তারা (প্রথম রাউন্ডে) যে দুটি ম্যাচ জিতেছে, সেই দুটিতেই তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন।’
‘৩৩ বা ৩৪ বছর বয়সে উন্নতি করা সহজ নয়। তবে তিনি উন্নতি করার একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন, তা ৫০ ওভারের ক্রিকেট হোক বা টি-টুয়েন্টিতে। সম্ভবত তিনি জীবনে সবচেয়ে বেশি চাপের মধ্যে ছিলেন।’
মাত্র ১৩০ রানের পুঁজি নিয়ে ২০ ওভারের ক্রিকেটে জয় পাওয়াটা সহজ নয়। আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুয়ে ঠিক সেই কাজটাই করে দেখিয়েছে। শেষ ৪ বলে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৪ রান। এমন অবস্থায় স্নায়ুচাপ ধরে রেখে ম্যাচ বের করে নেয় ৭ বছর পর আইসিসির কোনো বৈশ্বিক আসরে অংশ নেয়া দলটি।
রাজা বলেছেন, ‘যেহেতু জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের অংশ ছিলাম, মনে করি আমরা সেরা জয় পেয়েছি। কারণ এরচেয়ে ভালো মঞ্চ আর নেই। এটি বিশ্বকাপ, সবচেয়ে বড় মঞ্চ।’
‘সামান্য পুঁজি নিয়ে পাকিস্তানকে এক রানে হারাতে আপনাকে সবকিছু ঠিকঠাক করতে হতো। যা আমরা করেছি। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে আমি সম্ভবত সেরা জয়ের অংশ হয়ে গেছি।’