মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে প্রভাত চন্দ্র রায় (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার ২৪ জুলাই দুপুরে দিনাজপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাবিদ হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি প্রভাত চন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন। প্রভাত চন্দ্র রায় দিনাজপুর সদর উপজেলার মাধবপুর চিরাকুঠি গ্রামের লালু চন্দ্র রায়ের ছেলে।
আদেশে বলা হয়—মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন সাপেক্ষে আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রভাত চন্দ্রের সঙ্গে পারিবারিকভাবে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার মোস্তফাবাদ এলাকার সুভাষ চন্দ্র রায়ের মেয়ে ববিতা রানী রায়ের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান জন্ম হয়। ২০১৪ সালে প্রভাত বাড়ি থেকে চলে যায়। পরে সে ফিরে না আসায় ববিতা সন্তানদের নিয়ে মোস্তফাবাদ এলাকায় ভাই পরিতোষ রায়ের বাসায় আশ্রয় নেন। সেখানে অবস্থানের তিন মাস পর প্রভাত ফিরে এসে স্ত্রী-সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় সংসারে অশান্তি শুরু হয় এবং বাধা দিলে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে মারধর করে। তাদের কলহের বিষয়টি পারিবারিকভাবে একাধিকবার মিমাংসাও হয়। অন্যদিকে প্রভাতের নেশা করার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এ জন্য প্রায়ই বাড়িতে কলহ ও মারধরের ঘটনা ঘটত। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর ববিতা কলহের জের ধরে বাবার বাসায় চলে আসতে চাইলে প্রভাত লোহার শাবল দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। ববিতা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ববিতার ভাই পরিতোষ চন্দ্র রায় বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজ সোমবার দুপুরে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রবিউল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।