চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘আপনারা হলের জন্য ছবি বানান’

”সিনেমা হল থেকে টাকা আসে না, এই ধারণা চলতি বছর ভুল প্রমাণ করেছে। ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ খুব ভালো ব্যবসা করেছে। তবে অনেকেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য ছবি করছে। এটা কজন দেখে? কারও নাম উল্লেখ করছি না, ওটিটিতে সবাই সাবক্রাইব করে দেখে না। আমি মনে করি, ওটিটিতে ওতো মনোযোগ না দিয়ে হলের জন্যই ছবি বানানো উচিত। সিনেমার যে উইনডো থাকে সেটা এক কিংবা দুইমাস পর ওটিটিতে যাওয়া উচিত।”

কথাগুলো মাহবুব রহমান রুহেলের, যিনি দেশের সর্বাধুনিক সিনেথিয়েটার স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান এবং ‘ন ডরাই’ ছবির প্রযোজক। তিনি আরও বলেন, সিনেমা হলের জন্য ছবি বানালে পুরো ইন্ডাস্ট্রিটা বাঁচবে। মোবাইলের ছবি দেখে প্রকৃত অর্থে সেই মজাটা পাওয়া যায় না। সমস্ত পরিচালকের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা সিনেমা হলের জন্য ছবি বানান। তারপরে ওটিটিতে দেন।

২০০৪ সালে মাহবুব রহমান রুহেলের হাতে গড়া সিনেপ্লেক্সের এখন শহুরে দর্শকদের সিনেমা উপভোগের পছন্দের স্থান। ঢাকার বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডি, মহাখালী, মিরপুর, বিজয় স্মরণীর পর এবার চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করলো স্টার সিনেপ্লেক্সের ষষ্ঠ শাখা। গত শুক্রবার তিনটি স্ক্রিনে ৪৮০টি সিট নিয়ে বন্দরনগরীর চকবাজারের বালি অর্কিড শপিং মলে চালু হয়েছে এই শাখাটি। এতে করে চট্টগ্রামের সিনেপ্রেমীরাও বেশী উচ্ছ্বসিত।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নতুন শাখাটি উদ্বোধন শেষে মাহবুব রহমান রুহেল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, চট্টগ্রাম আমার শহর। সৌভাগ্যবান যে এই লোকেশনে সিনেপ্লেক্স দিতে পেরেছি। এখন আমাদের সিনেপ্লেক্সের সর্বোমোট ২০টি স্ক্রিন। শুরু থেকেই আমার ইচ্ছে ১০০ স্ক্রিন তৈরি করবো। যেহেতু ২০টি স্ক্রিন ইতোমধ্যে করে ফেলেছি, আমি মনে করি খুব শিগগির ১০০ স্ক্রিনের লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারব। এখন দরকার শুধু ভালো ভালো সিনেমা।

সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান রুহেল বলেন, টেকনোলোজির কারণে সবার হাতে হাতে মোবাইল। ঘরে বসেই তারা সবকিছু দেখতে পাচ্ছে। এতে করে মাদকাসক্ত ও জঙ্গিবাদ বাড়ছে। পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার রীতিটা অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে। সামাজিকভাবে আনন্দ করার ঐতিহ্যটাও মলিন হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই, সবাই সুন্দর পরিবেশে সবাই আবার হলে এসে সিনেমা দেখা উপভোগ করুক। আমরা আমাদের দিক থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত।

ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক দায়বন্ধতা থেকে ধীরে ধীরে সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়াচ্ছেন বলে জানালেন ‘ন ডরাই’ সিনেমার প্রযোজক রুহেল। তিনি বলেন, এরপর কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই, বগুড়া, রাজশাহী অঞ্চলে সিনেপ্লেক্সের চালু হবে। ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এখনকার মানুষের আছে খুবই সহজলভ্য। আমাদের ডিএনএ-এর মধ্যে আছে সিনেমা দেখার অভ্যাস। দর্শকের ফিনান্সিয়াল মেলডাউন যখন হয়ই, তখন তারা সিনেমা বেশী দেখে।

”তখন আর ব্যয়বহুল কিনা সেই চিন্তা করে না। সময়কে উপভোগ করার জন্য সিনেমা দেখে সবচেয়ে কস্ট ইফেকটিভ সমাধান। যতই সমস্যা থাকুক আমাদের বিনোদন দরকার। ২০২৩ সাল হয়তো আমাদের জন্য কঠিন সময় যেতে পারে, কিন্তু আমরা সবসময় আশাবাদী। ভালো সময় আসবেই। আমরা ভালো পরিবেশ ও সিনেমা আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি তাই আমার বিশ্বাস, ভালো সিনেমা দিতে পারলে দর্শক হলে আসবেন।”

হলিউডের সিনেমা চললেও বাংলাদেশের সিনেমাকে সবসময় প্রাধান্য দেয়া উল্লেখ করে রুহেল বলেন, ‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ দুটি সিনেমার মাধ্যমে লোকসান অনেকটাই পুষিয়ে নিয়েছি। রায়হান রাফীর মতো পরিচালকরা ভালো ভালো সিনেমা দিক। আমাদের সাপোর্ট সবসময় অব্যাহত থাকবে। ২০২২ সালটা আমাদের সিনেমার ব্যবসা ভালো গেছে। কিন্তু আগামীতে কি আসছে আমি জানি না। সেজন্য আগামী বছর কমপক্ষে দুটি ছবি করবো।