ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি এবং ছাদে যাত্রী নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ থেকেই ট্রেনের ছাদে যাত্রী নেয়া বন্ধ করতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রেলের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন ট্রেনের ছাদে লোক উঠে? এটা কি পয়সা ইনকামের পথ? ট্রেন জাতীয় সম্পদ। ট্রেন কি আপনারা গ্রাস করতে চাচ্ছেন?
সেসময় রেলের যুগ্ম মহাপরিচালক এ এম সালাউদ্দিন বলেন, ‘মাই লর্ড এটা (যাত্রী ছাদে ওঠা) বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তবু এটা আমাদের ব্যার্থতা।’
এ প্রসঙ্গে আদালত বলেন, ‘ছাদে বা দাঁড়িয়ে যারা যাচ্ছে তারা কি টাকা দিচ্ছে না? এটা তো দুর্নীতি। আর ছাদে যাত্রা ওঠা বন্ধ করতে পারছেন না; এই অসহায়ত্ব প্রকাশ করলে কি দেশ চলবে? এটা কোনো কথাই না। আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। অসম্ভব বলে কিছু নেই। এগুলো ঠিক হতে আর কতদিন সময় লাগবে? দেশ স্বাধীনের তো ৫০ বছর হয়ে গেছে।’
আদালত আরও বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে কিছু সিন্ডিকেটের কারণেই দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’
রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবাদ করা রনির বিষয়ে জানতে চাইলে সহজ ডটকমের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: জুবায়ের হোসেন আদালতকে বলেন, অনলাইনে টিকেট পেতে পেমেন্ট করতে ১৫ মিনিট সময় থাকে। কিন্তু সে ১ ঘণ্টা পর পেমেন্ট করেছিল তাই সে টিকেট পায়নি। তবে ৩ দিন পর সে পেমেন্ট করা টাকা ফেরত পেয়েছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড সহজ ডটকম এটা বলে পার পেতে পারে না। গতকাল ভোক্তা অধিকার তাদের অনিয়ম পেয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে, যেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা রনি পাবেন।’
তবে সহজ ডটকমের ভাইস প্রেসিডেন্ট আদালতকে বলেছেন, তারা ভোক্তা অধিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
একপর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘আজ থেকেই ট্রেনের ছাদে যাত্রী চড়া বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’
ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি ও ছাদে যাত্রী নেয়া বন্ধের বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সাথে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।