জেলা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক ও নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করে র্যাব হেফাজতে নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্ত্রী পরিষদ সচিবের প্রতি এই নির্দেশ দেন। এবং তদন্ত শেষ করে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সে প্রতিবাদ হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া কোন মামলার আগেই সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ কেন অবৈধ এবং অসাংবিধানিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে সুলতানাকে তুলে নেয়ার ঘটনায় সম্পৃক্ত র্যাব কর্মকর্তাদের এই তদন্ত চলাকালীন সংশ্লিষ্ট ব্যাটেলিয়ন থেকে প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। আর রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
নওগাঁ শহর থেকে আটকের পর র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামের নারীর মৃত্যুর অভিযোগের খবর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন এবং পরবর্তীতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। সে রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট ওই নারীকে গ্রেফতার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে কোন কোন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের সবার নাম-পরিচয় আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। সেই সাথে হাইকোর্ট বলেন, আমরা দেখতে চাচ্ছি এ ঘটনার সাথে আইনের কোনো গাফিলতি আছে কি না। জনগণ তাকিয়ে আছে ন্যায়বিচার দেখতে। আর আমরা আছি ন্যায়বিচার করতে। ওইদিন শুনানিতে রিটকারি আইনজীবী র্যাব হেফাজতে নওগাঁর ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশনা চান। সেই সাথে ওই ঘটনায় মামলা না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে পদক্ষেপ চান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যথাযথ প্রকৃয়ায় অনুযায়ী ওই নারীকে গ্রেফতারের পর অসুস্থ হলে হাসপাতালে সে মারা যায়।
একপর্যায়ে ওইদিন হাইকোর্ট ভুক্তভোগী ওই নারীর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং র্যাবের গ্রেফতার ও হেফাজতে নেয়ার এখতিয়ার সম্পর্কিত আইনী দিক দেখতে চান। সে ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার হাইকোর্টে পোস্টমর্টেম ও সুরতহাল রিপোর্ট দাখিল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। র্যাবের দাবি, প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে মারা যান। তবে তার স্বজনদের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।