শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জয়ের পথে টাইগার অধিনায়কের পাশাপাশি ব্যাট হাতে অনবদ্য অবদান রেখেছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ টাইগারদের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প।
ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন হেম্প। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই শুরু হয়েছে তার অ্যাসাইনমেন্ট। শুক্রবার দুপুর আড়াইটা সিরিজ জয়ের লক্ষে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নামবে বাংলাদেশ। তার আগের দিন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিয়ে ঐচ্ছিক অনুশীলনে এসেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহেসহ কোচিং স্টাফের সদস্যরা। সেখান দেয়া এক ভিডিও বার্তায় মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেছেন হেম্প।
প্রথম ওয়ানডেতে রানতাড়ায় নেমে ২৩ রানে ৩ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ-শান্ত ও শান্ত-মুশফিকের জুটিতে আর পেছনে ফিরতে হয়নি টাইগারদের। দুটি জুটিকে অসাধারণ মানছেন হেম্প। বলেছেন, ‘২৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, পাওয়ার প্লেতে এল মাত্র ৫৫ রান। সেই মানসিক অবস্থা থেকে রানে ফেরাটা ছিল খুবই ইতিবাচক। ৬৯ এবং ১৬৫ রানের জুটি দুটি রান তাড়ার জন্য অসাধারণ ছিল। ব্যক্তিগত নৈপুণ্য অবশ্যই খুব ভালো ছিল, তবে আমাদের জন্য মানসিকতাটাই বড়। মাথা ঠান্ডা রেখে খেলায় নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা, যেটা আমরা করতে পেরেছি।’
বিপর্যয়ের পর প্রথম প্রতিরোধটা গড়ে তোলেন মাহমুদউল্লাহ। শুধু প্রতিরোধ নয়, পাল্টা আক্রমণেও গেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। মাহমুদউল্লাহর এমন ব্যাটিং মনে ধরেছে হেম্পের। বলেছেন, ‘বল সুইং করছিল, শ্রীলঙ্কানরা স্টাম্প লক্ষ্য করে বল করছিল। ওরকম বিপজ্জনক বলেও সচেতনভাবে চেষ্টা করে গেছে সে। আমি মনে করি তাদের (মাহমুদউল্লাহ-শান্ত) ৬৯ রানের জুটিটাই ম্যাচের গতি ঠিক করে দিয়েছে বা বলতে পারেন যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ম্যাচ জেতার সুযোগ করে দিয়েছে।’
মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর শান্তর সঙ্গী হন আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ম্যাচ জেতা পর্যন্ত ছিলেন ক্রিজে। তার ৭৭ রানের ইনিংসে মুগ্ধ হেম্প। বলেছেন, ‘মুশফিকের ইনিংস আউটস্ট্যান্ডিং। সে মোটেও বিচলিত হয়নি। রিয়াদ বাউন্ডারিতে রান বের করছিল, মুশফিক সেটাকে নিজের মতো খেলে অব্যাহত রেখেছে। সে প্রমাণ করেছে রান করা মানেই শুধু বাউন্ডারি নয়, সিঙ্গেল রোটেশন করেও রান বের করা যায়। পুরো ইনিংসজুড়েই সে দারুণ খেলেছে।’
শান্তর ১২২ রানে অপরাজিত ইনিংস আর মুশফিকের যোগ্য সঙ্গীর ভূমিকায় সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। দুজনে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ১৬৫ রানের জুটি গড়ে। অনবদ্য জুটি নিয়ে হেম্প বলেছেন, ‘১৬৫ রানের পার্টনারশিপ আমাদের ম্যাচ জিতিয়েছে, শান্ত ও মুশফিক ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছে দেখে খুব ভালো লেগেছে।’
দলীয় প্রচেষ্টা এবং অধিনায়ক শান্তর ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন হেম্প। তার মতে, ‘অনেকগুলো বিষয়ই এখানে কাজ করেছে। অধিনায়কের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়াটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেটা করার কথা বলি, সেটা করে দেখানো বা সেটাকে কাজে পরিণত করা। কাল রাতে ও সেটাই করেছে। আর শুধু একশ করা তো নয়, ওয়ানডেতে এটা তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও। কাজেই একজন খেলোয়াড় এবং দলের অধিনায়ক হিসেবেও দিনটা খুব ভালো ছিল তার জন্য।’