রাস্তার ধারে পড়ে ছিল অজ্ঞাতনামা ‘পাগলী’র (মানসিক ভারসাম্যহীন নারী) মরদেহ। দুর্ঘটনায় ক্ষতস্থানে জমে ছিল পুজ, রক্ত আর পোঁকা। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল কিছু মানবিক মানুষ। শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালের বারান্দাই মৃত্যু হয় তার।
বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে ওয়ার্ডেও পাঠানো হয়েছিল তাকে। কিন্তু পোঁকায় খাওয়া শরীর আর বেওয়ারিশ দেখে ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানায় ওয়ার্ডের সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, মাসখানেক আগে নগরীর চৌমাথা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অজ্ঞাতনামা ৪৬ বছর বয়সী এক নারী। সেখানে গুরুতর আহত হয় ওই পাগলী। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না নেওয়ায় ক্ষতস্থানে শুরু হয় পঁচন। এরপর পর্যায়ক্রমে সেখানে পোকা বাসা বাধে।
গত বুধবার রাতে এনিমেল কেয়ার টিম নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই নারীর অবস্থা খারাপ দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। ক্ষতস্থানের পোকাগুলো বের করে শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানকার আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এসএম আশরাফুল আলম ওই নারীর অবস্থা দেখে চতুর্থ তলায় মহিলা সার্জারি ওয়ার্ড-২ এ ভর্তির নির্দেশনা দেন। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা নার্সরা ওই রোগীর চিকিৎসা নিতে অপারগতা জানান। শেষে রাত ১টা ১০ মিনিটে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে প্রতিটি প্রাণীর জীবনের মূল্য আছে, হোক সে কুকুর, বেড়াল বা কাক। কিন্তু এই নারী তো একজন মানুষ। তবে কেন তিনি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পাবেন না।
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় হাসপাতালের সহকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মনিরুজ্জামান শাহিনকে প্রধান করে একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।