প্রথম সিনেমা ‘আইসক্রিম’ দিয়েই নজর কেড়েছিলেন নাজিফা তুষি। পরবর্তীতে বেশকিছু বিজ্ঞাপন, নাটক এবং ওটিটিতে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন। তার অভিনীত নতুন সিনেমা ‘হাওয়া’ আসছে চলতি বছরেই। মঙ্গলবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় প্রকাশিত হয়েছে এর ট্রেলার।
মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় ‘হাওয়া’র ট্রেলার অন্তর্জালে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক প্রশংসা চারদিকে। তারকাবহুল এই সিনেমায় আলাদা করে নজর কেড়েছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, সোহেল রানা, সুমন আনোয়াররা। তবে এই ছবির ট্রেলারে ‘ফোকাস’ অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে ঘিরে!
ট্রেলার দেখে অনেকের প্রশ্ন তুষিকে কেন নিয়মিত পাওয়া যায় না? সেই উত্তর হাসিমুখে এভাবেই দিলেন তুষি, ‘ইন্ডাস্ট্রিকে জিজ্ঞেস করেন! আমি তো নিয়মিত কাজ করতে চাই। কিন্তু পছন্দমতো কাজ তো আমার কাছে আসতে হবে, নাকি?’
ট্রেলারে চঞ্চল চৌধুরী, সুমন আনোয়ার, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন, সোহেল মণ্ডল সহ বাঘা বাঘা শিল্পীদের সঙ্গে নজর কেড়েছেন তুষি। তিনি মনে করেন, এটা সম্ভব হয়েছে টিম ওয়ার্ক-এর কারণে। তার একার পক্ষেও এতো বড় কাজ ভালো করা সম্ভব নয়।
প্রায় আড়াই মিনিটের ট্রেলারে সীমাহীন সাগরের নীল জলের জেলেদের জীবনের অন্যরকম এক গল্পের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। শিগগির ‘হাওয়া’ মুক্তি পাবে। দর্শকদের প্রত্যাশা, ‘হাওয়া’ মুক্তির পর নতুন করে আলোচনায় আসতে পারেন নাজিফা তুষি।
বুধবার বিকেলে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে তুষি স্মৃতি থেকে ‘হাওয়া’ শুটিংয়ের দিনগুলি নিয়ে বলছিলেন। তুষি বলেন, সমুদ্রের মধ্যে ৪৫ দিন অসাধ্য সাধন করার মতো কষ্ট করতে হয়েছে। অনেকটা মিলিটারি ট্রেনিংয়ের মধ্যে ছিলাম। এতো কষ্ট করেছি, আমরা মরেও যেতে পারতাম। যুদ্ধের মতো লাগছিল। সেখানে যে কোনো সময় মরে যাওয়ার চান্স থাকে, আমাদের অবস্থাও তেমন ছিল।
তুষি মনে করেন, মাঝ সমুদ্রের জলরাশিতে ‘হাওয়া’র শুটিং সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে শক্তিশালী ‘প্রি-প্রোডাকশন’-এর কারণে।
‘নেটওয়ার্কের বাইরে’-খ্যাত ওয়েব ফিল্মের এই অভিনেত্রীর কথা, আগেই জানতাম সমুদ্রের মাধ্যে কী কী সমস্যায় পড়তে হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ি। সাগরের মাঝে থাকতে থাকতে বড় ঢেউয়ে এতটাই ‘ইউজ টু’ হয়ে গিয়েছিলাম যে তীরে না আসা পর্যন্ত বুঝতে পারিনি কত বিপদে ছিলাম। কাজটার মধ্যে এতটাই মগ্ন ছিল তখন কোনো ঘূর্ণিঝড় বা মহাবিপদ সংকেত মাথায় কাজ করেনি।”
‘হাওয়া’র ট্রেলার প্রকাশের ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে নাজিফা তুষি বললেন, সবার কাছে আমি থ্যাংকফুল। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে ‘হাওয়া’র কোয়ালিটি মানুষ ভালভাবে গ্রহণ করেছে। আমার বা চঞ্চল ভাইয়ের ফ্যানদের বাইরেও ম্যাঙ্গো পিপল খুব পছন্দ করেছে। সবার একই কথা, লুক-প্রেজেন্টেশন, ক্যামেরা বা গল্প বলার ধরনটা হয়তো একেবারে অন্যরকম।
”যখন কোনো গল্প বা স্ক্রিপ্ট আসে যেকোনো আর্টিস্ট বুঝতে পারে কাজটা কেমন হতে পারে। এর বাইরে পরিচালক ও তার টিমটা গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছু যখন খাপ খায় তখন বোঝা যায় যে কাজটি কোয়ালিটি সম্পন্ন হবে। ‘হাওয়া’ এদিক থেকে একেবারে উপযুক্ত। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, একটা ভালো টিম সবসময় একটা ভালো প্রডাকশন তৈরি ও পরিবেশন করে থাকে।”
বিজ্ঞাপন নাটক বানিয়ে পরিচিতি পাওয়া পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’। তুষি মনে করেন, নতুন পরিচালক ও তার টিম এবং চিন্তাভাবনায় ভালো কাজ দিতে পারে। কথার সূত্র ধরে বললেন, যে কোনো পরিচালকের সঙ্গে মিটিং করলে তার মেধা বহিঃপ্রকাশ কিছুটা বোঝা যায়। পড়াশোনার দৌড়ও বোঝা যায় এখনকার বেশিরভাগ নতুন পরিচালক কিংবা অভিনয় শিল্পীরা মেধাবী। মেজবাউর রহমান সুমন নামটাই একটা ব্র্যান্ড। বাংলাদেশে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ নির্মাতা।
যোগ করে নাজিফা তুষি বলেন, তার অনেক কাজ দেখেছি। ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে মিশেছি। তার হাজারটা ভালো দিক খুঁজে পেয়েছি। ‘আইসক্রিম’ আমার প্রথম সিনেমা হলেও ‘হাওয়া’র কারণে একেবারে অফট্র্যাক চরিত্র করতে পেরেছি। আমাকে তৈরি হতে যে মানুষটা প্রথম সাহায্য করেছে তিনি মেজবাউর রহমান সুমন। তার কাছ এতোকিছু শিখেছি যে তাকে আমার মেন্টর মনে করি। শুধু কাজে নয়, আমার ব্যক্তি জীবনে ও ভাবনায় মেজবাউর রহমান সুমনের অনেক প্রভাব আছে।
‘হাওয়া’য় তুষি তার চরিত্র নিয়ে খুব বেশি ব্যাখ্যা দিতে চাইলেন না। ইঙ্গিত দিয়ে বললেন, একজন বেদের চরিত্র করেছি। যেটি অনেক পাওয়ারফুল নারী। হিউম্যান পাওয়ারের বাইরে অতিরিক্ত পাওয়ার কাজ করে এবং সমুদ্রের মধ্যে একটা জার্নির গল্প। মিথোলজিক্যাল বা ফ্যান্টাসাইজ গল্পও বলা যেতে পারে।