চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

‘ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমস’ খেলেই নৃশংসতা শিখল রায়হান

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালির বাউফলের ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী নাফিজ ও মারুফকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. রায়হান কাজী ওরফে রিমন। 

র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তার রায়হান নিয়মিত ফ্রি-ফায়ার এবং পাবজি গেমস’এ আসক্ত ছিল। এসব গেমস’এ মারামারি দেখেই সে ধরনের নৃশংস কাজে উৎসাহিত হয়েছে। এছাড়াও রায়হানের নেতৃত্বে একটা কিশোর গ্রুপ এলাকায় তাদের সমবয়সী কিশোরদের নিয়ন্ত্রণ করত এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দিত।

Bkash July

গত ২২ মার্চ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী মারুফ হোসেনে বাপ্পী এবং  নাফিজ মোস্তফা আনছারী একই স্কুলে পড়ুয়া কয়েকজন উশৃঙ্খল শিক্ষার্থীর হাতে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়। এই ঘটনায় গত ২৪ মার্চ ভুক্তভোগীদের পরিবার বাদী হয়ে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-২৪) দায়ের করেন।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ২৭ মার্চ রাতে নরসিংদীর রায়পুরা ও রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মো. রায়হান কাজী ওরফে রিমন (১৫) ও তার সহযোগী মো. হাসিবুল ইসলাম ওরফে হৃদয় (১৫) কে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩।

Reneta June

মঙ্গলবার ২৮ মার্চ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন: ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এতে নবম শ্রেণীর অপর শিক্ষার্থী রায়হান এগিয়ে এসে সৈকতের পক্ষ নিয়ে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ ও তার সহপাঠী নাফিজ, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ২২ মার্চ স্কুল ছুটির পর রায়হানের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রায়হান ও তার সহযোগীরা মিলে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিয়াম, নাফিজ ও মারুফকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। পরে তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাফিজ ও মারুফকে মৃত ঘোষণা করেন। রায়হানের নেতৃত্বেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রায়হানসহ আরো বেশ কয়েকজন বিদ্যালয় সংলগ্ন পাংগাশিয়া ব্রিজের কাছাকাছি গিয়ে মারুফ, নাফিজ, সিয়ামসহ অন্যান্যদের ব্রিজের উপর গতিরোধ করে। মারুফ, সিয়াম, নাফিজসহ অন্যান্যরা উক্ত ব্রিজের কাছাকাছি গেলে রায়হানের নেতৃত্বে ব্রিজের উপর আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সাইদুর ওরফে সৈকত, হাসিব ওরফে হৃদয়, নাঈম হোসেন, সিফাত এবং মশিউর মিলে মারুফ, নাফিজসহ অন্যান্যদেরকে মারধর শুরু করে। এরপর রায়হান ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়ি সিয়াম, মারুফ ও নাফিজকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রায়হানের ছুরিকাঘাতের ফলে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। ঘটনাস্থলে তিন শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে হত্যাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ঘটনার পর গ্রেপ্তার আসামি রায়হান লঞ্চে করে ঢাকায় আসার সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি নদীতে ফেলে দেয়। এরপর সে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলযোগে নরসিংদীর রায়পুরায় পরিচিত বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং গ্রেপ্তার হাসিব ওরফে হৃদয় হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পটুয়াখালী থেকে বাসযোগে ঢাকায় পৌছে পল্লবীতে তার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়।

আল মঈন বলেন: গ্রেপ্তার রায়হান ও হাসিবুল স্থানীয় স্কুলটির নবম শ্রেণীর ছাত্র। তারা তাদের সমমনা কিছু উশৃঙ্খল সহপাঠীদের নিয়ে পাংগাশিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য সবসময় তাদের সাথে ছুরি, চাকু ইত্যাদি বহন করত এবং মারামারিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক বিভিন্ন ঘটনায় লিপ্ত থাকত। তাদের উশৃঙ্খল এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য স্থানীয় স্কুল শিক্ষকসহ অভিভাবকরা তাদেরকে অপছন্দ করত।

তারা এলাকায় তাদের সমবয়সী কিশোরদের নিয়ন্ত্রণ করত এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দিত। এছাড়াও গ্রেফতার হাসিবুল এলাকায় বিভিন্ন সময়ে মারামারিরসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে গ্রেপ্তার রায়হানের যাবতীয় অপকর্মের অন্যতম সহযোগী হিসেবে থাকত।

তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View