ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফ্রান্সে চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৬২ থেকে ৬৪ বছর করে একটি বিল পাশ করা হয়েছে। কিন্তু অবসরের বয়সসীমা ২ বছর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে দেশটির বেশিরভাগ মানুষ।
শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে অংশ নিচ্ছে মানুষ। অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দেশটির শিক্ষা, পরিবহনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে।
অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির এই বিল প্রত্যাহারে মানুষ যেভাবে গণআন্দোলন শুরু শুরু করেছে তাতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সংস্কার পরিকল্পনা বাঁচা-মরার মুখে পড়েছে।
রেল কর্মীদের ধর্মঘটে রেল সার্ভিস বন্ধ প্রায়। প্যারিসের মেট্রোরেলের শুধুমাত্র ড্রাইভার বিহীন স্বয়ংক্রিয় দুটি ট্রেন চলাচল করছে।অনেক স্কুল এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা৷ অরলি এয়ারপোর্টের ২০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

প্যারিস এবং অন্যান্য শহরের বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। যাতে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন।
পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কার আনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। ২০১৭ সালে প্রথমবার যখন ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন, তখনই পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে সেই সময় দেশটির নাগরিকদের একটি বড় অংশ এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল। এরপর করোনার কারণে তার এ চিন্তার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আবার সেই উদ্যোগ নিলেন ম্যাক্রোঁ। কারণ, এই মেয়াদই তার শেষ সুযোগ।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্নির উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাব অনুযায়ী সম্পূর্ণ পেনশন ভাতা প্রাপ্তির জন্য ২০২৭ সাল থেকে মানুষকে চাকরির বয়স ৪৩ বছর পূরণ করতে হবে, যা বর্তমানে রয়েছে ৪২ বছর। দেশটির নাগরিকদের বড় অংশ এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে।
সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা গেছে, ফ্রান্সের জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছ। এমনকি ম্যাক্রোঁর দলের বেশ কয়েক সংসদ সদস্যও এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। বলছেন, ম্যাক্রোঁর এমন সিদ্ধান্তের কারণে গত সংসদ নির্বাচনে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।