সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুর একাদশে ছিলেন না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মহাতারকার জায়গায় কোচ ফের্নান্দো সান্তোস খেলিয়েছেন গনসালো রামোসকে। ২১ বর্ষী ফরোয়ার্ড কোচের আস্থা রেখেছেন, অভিষেকে করেছেন হ্যাটট্রিক। পর্তুগাল পেয়েছে ৬-১ গোলের বড় জয়। পৌঁছে গেছে কোয়ার্টারে। শেষ আটে তাদের সামনে মরক্কো।

লুসেইল স্টেডিয়ামে সুইসদের বিপক্ষে গোল উৎসবেই মেতে উঠেছিল পেপে-ব্রুনোদের দল। কাতার বিশ্বকাপ পেয়েছে প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা। ইউসেবিও’র পর নকআউট পর্বে পর্তুগালের হয়ে হ্যাটট্রিক পেয়েছেন গনসালো রামোস। উৎসবে যোগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন পেপে, জাল খুঁজে পেয়েছেন গেরেইরো ও রাফায়েল লিয়াও।
আগের ম্যাচে আফ্রিকার ইতিহাসে চতুর্থ দেশ হিসেবে কোয়ার্টারের টিকিট কেটেছে মরক্কো। ১৯৯০ সালে প্রথম এই কীর্তি গড়েছিল ক্যামেরুন। ২০০২ সালে সেনেগাল ও ২০১০ সালে ঘানা শেষ আটের টিকিট কেটেছিল। কাতারে মরক্কো গড়েছে শক্তিশালী স্পেনকে টাইব্রেকারে রুখে দিয়ে। ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল সুমামা স্টেডিয়ামে মরক্কো মুখোমুখি হবে পর্তুগাল।
কাতারের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই সুইসদের উপর দাপট দেখায় পর্তুগাল। রোনালদোবিহীন দলের আক্রমণের দায়িত্ব কাঁধে নেন রামোস, বুঝতে দেয়নি সিআর সেভেনের অভাব।
ম্যাচের ১৭ মিনিটে অসাধারণ এক গোলে এগিয়ে দেন বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়া গনসালো। থ্রো থেকে বল পেয়ে রামোসের দিকে পাস দেন ফেলিক্স। বল নিয়ে দূরহকোণ থেকে জোরাল শটে পর্তুগালের প্রথম গোলটি করেন তরুণ ফরোয়ার্ড। ৩৩ মিনিটে ইতিহাস গড়া গোলে ব্যবধান বাড়ান পেপে।
বিশ্বকাপের সবচেয়ে বয়সী ফুটবলারদের (৩৯ বছর ৩৮৩ দিন) একজন হিসেবে নকআউট পর্বে গোল করার অনন্য কীর্তি গড়লেন পেপে। সবচেয়ে বেশি বয়সে গোলের কীর্তি ক্যামেরুনের রজার মিলারের। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে রাশিয়ার বিপক্ষে ৪২ বছর ৩৯ দিন বয়সে গোল করেছেন তিনি। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নাম উঠল পর্তুগাল রক্ষণ তারকার।
প্রথমার্ধের শেষদিকে একটি নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় পর্তুগাল। সুইস গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি রামোস। তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন সোমের।
বিরতির পর অবশ্য বেশি সময় নেননি হ্যাটট্রিক পূর্ণ করতে। ৫১ মিনিটের পর ম্যাচের ৬৭ মিনিটে জাল খুঁজে নেন রামোস। যেটি চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক। অভিষেকে এই হ্যাটট্রিক রামোসকে বসিয়েছে কিংবদন্তি ইউসেবিওর পাশে।
দ্বিতীয় পর্তুগিজ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে হ্যাটট্রিক করলেন ২১ বর্ষী ফরোয়ার্ড। ১৯৬৬ আসরে কোয়ার্টারে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৪ গোল করেছিলেন ইউসেবিও। মহাতারকার পাশে নাম লেখানো রামোসের ছিল পর্তুগাল জার্সিতে চতুর্থ ও বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে রাফায়েল গেরেইরো গোলসংখ্যা বাড়িয়ে দেন পর্তুগালের। তিন মিনিট পর অর্থাৎ, ৫৮ মিনিটে ম্যানুয়েল আকানজি গোল করে স্কোরলাইন ৪-১ করেন।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ৫-১ করে দেন রামোস। ম্যাচের ২০ মিনিটের মতো সময় বাকি থাকতে মাঠে নামেন রোনালদো। পর্তুগালের নিয়মিত অধিনায়ক নামেন হ্যাটট্রিক গড়া রামোসের জায়গাতেই। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দৃষ্টিনন্দন শটে ব্যবধান ৬-১ করে সুইসদের স্বপ্নে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন রাফায়েল লিয়াও।