নির্ধারিত সময়ের খেলা ছিল অমীমাংসিত। ফলাফল নির্ধারণে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। তাতেও মেলেনি ফল। লড়াই গড়ায় টাইব্রেকারে। গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ তিনটি শট ঠেকিয়ে দেন জাপানের, বনে যান ম্যাচের নায়ক। জাপানকে টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া।
এরাতেই শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হবে ব্রাজিল এবং সাউথ কোরিয়া। জয়ী দলটি শেষ আটে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলবে। ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে হবে খেলা।
সোমবার আল জানুব স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের খেলা ছিল ১-১। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও একই থাকে স্কোর। তারপর টাইব্রেকার।
সেখানে জাপানের মিনামিনো ও মিতোমার শট পরপর ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। আর ক্রোয়েশিয়ার প্রথম দুটি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ভ্লাসিচ এবং ব্রোজোভিচ।
জাপানের আসানো তৃতীয় শটে গোল পেলেও ক্রোয়েশিয়ার লিভাজার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। জাপানের ইয়োহিদার করা চতুর্থ শট আবারও ঠেকান লিভাকোভিচ। পরে পাসালিচের শট জালে গেলে জয়ের আনন্দে ভাসে ক্রোয়েটরা।
তার আগে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের দারুণ সুযোগ পায় জাপান। ভাতারু এনদোর কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন সোগো তানিগুচি। অল্পের জন্য বল জালে জড়ায়নি।
মিনিট পাঁচেক পর বক্সের ভেতর জাপানিজরা বলের নিয়ন্ত্রণ হারায়। ইভান পেরিসিচ জটলার ভেতর দূরহকোণ থেকে নেন কিক। জাপান গোলরক্ষক সুচি গোন্ডা বল লুফে নেন।
ম্যাচের ১২ মিনিটে ইতু নাগামোতো গোলমুখে ফিনিশিং টাচ দিতে না পারায় বঞ্চিত হয় সূর্যোদয়ের দেশটি। ৪১ মিনিটে এনদোর বাড়ানো বল নিয়ে ডান পায়ের দূরহকোণের কিকে দাইচি কামাদা গোলের সুযোগ নষ্ট করেন।
দুই মিনিট পর জাপানের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। অধিনায়ক মায়া ইয়োশিদার পাসে বল নিয়ে বাঁ-পায়ের প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন দাইজেন মাদা। বিরতির পর ৫৫ মিনিটে ডেজান রভরেনের লম্বা পাসে বক্সের ভেতরে থাকা ইভান পেরিসিচ গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে ম্যাচে ফেরান।
দুই মিনিট পর এনদোর নেয়া ডান পায়ের দূরপাল্লার শট লাফিয়ে ডান হাতে প্রতিহত করেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৬০ মিনিটে এনদোর অ্যাসিস্টে বল পাওয়া রিতসু দোয়ানের দূরপাল্লার শটও লিভাকোভিচ ঠেকিয়ে দেন।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা খেলার ৬৩ মিনিটে লুকা মদ্রিচের হাফ-ভলি দারুণ ডাইভে বাঁ-হাতে প্রতিহত করেন গোন্ডা। তিন মিনিট পর আন্তে বুদিমিরের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে যেতে পারেনি।
ইয়োশিদা খানিক পর সতীর্থ তাকেহিরো তোমিয়াসুকে পাস দিতে যান, পাস দুর্বল হওয়ায় পেরিসিচ বলের দখল নিয়ে ৭৭ মিনিটে দূরপাল্লার শট নেন। যদিও তা জাপানের রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি।
বাকি সময়ে কোনো দল গোলের দেখা না পাওয়ায় খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। এবারের বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে এ ম্যাচেই প্রথম অতিরিক্ত সময়ের উত্তেজনার দেখা মিলল। ১০৫ মিনিটের মাথায় তাকেরিরো তোমিয়াসুর অ্যাসিস্টে বল নিয়ে কাওরু মিতোমা ডান পায়ে দূরপাল্লার শট করেছিলেন। দারুণ দক্ষতায় লাফিয়ে তা পোস্টের বাইরে পাঠিয়ে দেন লিভাকোভিচ।
অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে মিলাভ অরসিচের পাসে বল পাওয়া লভরো মাজেরের ডান পায়ের শট অল্পের জন্য পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে জাপানের স্বপ্নভঙ্গ।