‘গোল হয়েও হইল না গোল’— বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’ কথাটির সঙ্গে বেশ মেলানো যায়। সৌদি আরবের বিপক্ষে লৌতারো মার্তিনেজ ও লিওনেল মেসি জ্বলন্ত প্রমাণ। লুসেইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে ভুগিয়েছে অফসাইড গেরো। তিনটি গোল বাতিল হয়েছে। শেষপর্যন্ত যা গড়ে দিয়েছে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান।
লৌতারোর দুটি ও মেসির একটি অর্থাৎ, মোট তিনটি গোল বাতিল হয়েছে আর্জেন্টিনার। মেসিরা প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। দশম মিনিটে পেনাল্টিতে মেসি এগিয়ে নেয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের দুটি গোলে জয় আনে সৌদি। শেষঅবধি লিওনেল স্কালোনির ডাগ আউটে অফসাইডগুলোই আক্ষেপ হয়ে থাকবে, ‘ইশ্, তিনটির মাঝে দুটি গোলও যদি হত!’
ফুটবলে অফসাইডের ঘটনায় ভোগা বেশ পুরনো ঘটনা। বিশ্বকাপের মতো আসরেও আছে গোল বাতিলের ভুরিভুরি রেকর্ড। তালিকা ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, অফসাইডের গেরোতে সবচেয়ে বেশিবার পড়েছে ইংল্যান্ড। ক’বার জানেন? ১৯৮২ বিশ্বকাপে কুয়েতের জালমুখে ২০ বার দৌড়েও তারা বাড়াতে পারেনি স্কোরলাইন। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত কোনোমতে ১-০ গোলে জিতেছিল ইংলিশরা।
তালিকায় দুই নম্বরে থাকা দুর্ভাগা দলটির নাম চেকোস্লোভাকিয়া। ১৯৮২ বিশ্বকাপেই দ্বিতীয়বার কুয়েতের সঙ্গে তিক্ত সমস্যাটিতে পড়েছিল তারা। সংখ্যাটি নেহাত কম নয়, ১৮ বার। পরের স্থানটিও ইংল্যান্ডের। ১৯৬৬ সালে ফ্রান্সের জালে ১৬ বার বল জড়াতে গিয়ে বা জড়িয়ে রেফারির বাঁশি শুনে থেমে যেতে হয়েছে তাদের, জালে বল জড়ালেও গোলের বাঁশি বাজাননি রেফারি।
১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ভাগ্য খুলে দিয়েছিল অফসাইডের গেরো। ১৬ বার ইতালির আক্রমণ ধসিয়ে দিয়েছিল অফসাইড। ১৯৮৬ সালে আলজেরিয়ার বিপক্ষে স্পেনের ছিল ১৫টি অফসাইড। ১৯৮৬ সালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফ্রান্সের ১৪টি, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের ১৩টি করে গোল বাতিল বা আক্রমণ থামিয়ে দেয়ার রেকর্ড আছে।
কাতার মহাযজ্ঞে অন্যতম ফেভারিট হয়ে আসা আর্জেন্টিনাও সেই অফসাইডের গেরোতে পড়েছে, তাদের বিপক্ষে ১০ বার অফসাইডের বাঁশি বেজেছে লুসেইলে, যার ৩ বার বল জালে জড়ানোর পর। সংখ্যায় রেকর্ড না হলেও এদিনের বাঁশির হুইসেল মেসি-ডি মারিয়াদের কানে হতাশার সুর শোনাবে অনেকদিনই।