চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

রেকর্ডময় মেসি, দৃষ্টিনন্দন আলভারেজ, ফাইনালে আর্জেন্টিনা

রেফারি কিক অফের বাঁশি বাজানো মাত্রই রেকর্ড স্পর্শ করেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়ার দিনে পেলেন গোলও। তাতে হয়ে গেল আরেকটি রেকর্ড। একটি গোলে ছিল তার সহায়তা। মেসিময় দিনে লাতিন ছন্দে বাজিমাত করে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনালে উঠে গেছে আর্জেন্টিনা। ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ট্রফি থেকে এক জয় দূরে এখন আলবিসেলেস্তেরা। তরুণ আলভারেজ করেছেন জোড়া গোল।

দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বুধবার আল বাইত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও মরক্কো। জয়ী দলটি আগামী রোববার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে লড়বে।

জার্মানির সাবেক ফুটবলার লোথার ম্যাথাউসের বিশ্বকাপে সর্বাধিক ২৫ ম্যাচ খেলার মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন মেসি। মঙ্গলবার রাতে লুসেইল স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেই রেকর্ডটা ধরেছেন। আর্জেন্টাইন মহাতারকা ফাইনাল খেলছেন, রেকর্ডটি একার করে নেয়ার সুযোগও পাচ্ছেন।

প্রথমার্ধে দুই দলই তেমন একটা আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয়নি। ঢিমেতালে চলতে থাকা ম্যাচের ২৫ মিনিটে প্রথম পোস্ট বরাবর শটের দেখা মেলে। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের পাসে বল পাওয়া এনজো ফের্নান্দেজের ডান পায়ের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ক্রোয়েট গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ।

ছয় মিনিট পর মারিও পাসালিচের বাড়ানো বল ডান মাতেও কোভাচিচ। তার পাসে বলের নিয়ন্ত্রণ নেয়া ইভান পেরিসিচের বাঁ-প্রান্ত থেকে নেয়া শট অল্পের জন্য পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।

কয়েক সেকেন্ড পর পাল্টা আক্রমণ থেকে বল নিয়ে বক্সের ভেতর ঢোকেন জুলিয়ান আলভারেজ। বল ঠেকাতে গিয়ে সামান্য এগিয়ে আসা লিভাকোভিচ ধাক্কা দিয়ে বসেন আলভারেজকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে দেন। ফাউল না করলেও আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারকে বাধার মুখে ফেলে লিভাকোভিচ দেখেন হলুদ কার্ড। রেফারি পেনাল্টির সংকেত দেয়ার পর তর্কে জড়ানোয় কোভাচিচকেও হলুদ কার্ড দেখতে হয়।

ম্যাচের ৩৪ মিনিটে স্পট কিক থেকে নিশানাভেদ করতে ভুল করেননি মেসি। এলএম টেন পেয়ে যান আকাশী-নীল জার্সিতে বিশ্বকাপে ১১তম গোল। স্বদেশি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে (১০) টপকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বাধিক গোলের মালিক এখন মেসি। কাতার বিশ্বকাপে কাইলিয়ান এমবাপের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৫ গোলের মালিক হয়ে গোল্ডেন বুটের দাবিদারও হলেন।

পাঁচ মিনিট যেতে না যেতেই আবারও গোল, পাল্টা আক্রমণে ঝলক দেখায় আলবিসেলেস্তেরা। মাঝ মাঠ থেকে মেসির বাড়ানো বল নিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে দৌড়ে জাল খুঁজে নেন আলভারেজ। ব্যবধান দ্বিগুণ হয়।

আর্জেন্টিনা বিরতির আগে তৃতীয় গোলটা পেয়েই যাচ্ছিল। মেসির কর্নার কিকে উড়ে আসা বলে হেডে নেন অ্যালিস্টার। দারুণভাবে বল ঠেকান লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে এনজো ফের্নান্দেজের অ্যাসিস্টে বল নিয়ে কিক নেন মেসি। যদিও ক্রোয়েট গোলরক্ষক তা ঠেকিয়ে দেন।

ম্যাচের ৬৯ মিনিটে লুসেইল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে থাকা দর্শকরা দেখেন আরেকটি মেসি-ক্ল্যাসিক। ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণে উঠে ডিফেন্ডার জসকো গ্যাভারিওলের কড়া পাহারাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, শরীরকে ঢেউয়ের মতো দুলিয়ে মোচড় দিয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বক্সে ঢুকে পড়েন, সীমানার কোল ঘেঁষা জায়গা থেকে আলভারেজকে দেন পাস। ডান পায়ের ছোঁয়ায় আলভারেজ গোল করে ক্রোয়েশিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন।

ব্যবধান কমাতে চার মিনিট পর পেরিসিচের নেয়া দূরপাল্লার শটে বল শুয়ে ধরে ফেলেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ৮১ মিনিটে লুকা মদ্রিচকে মাঠ থেকে তুলে নেন কোচ দালিচ। মলিন বদনে ক্রোয়েশিয়া অধিনায়ক ডাগ আউটে চলে যান।

খানিক পর আরেকটি গোলের সুযোগ দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা পেয়েছিল। অ্যালিস্টার কিকটি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। বাকি সময়ে ক্রোয়েশিয়া অন্তত একটি গোল আদায়ের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ফাইনালে ওঠার উৎসবে মাতে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View