এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় গড়াবে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচসহ পাঁচটি খেলার আয়োজন করা হবে মেক্সিকোর অ্যাজতেকা স্টেডিয়ামে। ৮৩,০০০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পথে ফিফা। স্টেডিয়ামটির বক্স মালিকরা ছাড়তে চাচ্ছেন না নিজেদের আসনগুলো।
নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের ৩০ দিন আগে এবং ফাইনালের সাত দিন পর্যন্ত স্টেডিয়ামের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছে ফিফা। তবে অ্যাজতেকা স্টেডিয়ামে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি।
১৯৬০-এর দশকে স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ হাতে নেন মেক্সিকান ব্যবসায়ী এমিলিও আজকাররাগা মিলমো। অর্থায়নের জন্য ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যে বক্সগুলো বিক্রি করেন। চুক্তি অনুযায়ী বক্সের মালিকরা সেগুলো ৯৯ বছর ব্যবহার করতে পারবেন। যেখানে স্টেডিয়ামে সকল ইভেন্টে সীমাহীন প্রবেশাধিকারও রয়েছে মালিকদের।
৬৫ বর্গফুটের বক্সগুলো বর্তমানে মেক্সিকো সিটির একটি শীর্ষ মূল্যের পণ্য। যার বর্তমান বাজারমূল্য দেড় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনেক মালিকই তাদের বক্সগুলোকে কিছু ইভেন্টের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকেন।
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়ামের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিতে আপত্তি জানায় ১৩৭টি বক্স মালিকের একটি সংগঠন। তাদের আশা ছয় দশক আগে করা স্টেডিয়াম নির্মাণের সময়কালীন চুক্তিকে সম্মান করবে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
সংগঠনটির একজন মুখপাত্র ৬১ বর্ষী রুয়ানো বলছেন, ‘বক্সগুলো কেনার সময় সেখানকার পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাওয়ার চুক্তিতেই অর্থ প্রদান করেছি। আমাদের জন্য কোনো বিধিনিষেধ থাকেতে পারে না। আমাদের দাবির পক্ষে দলিল রয়েছে, এটা বিতর্কের জন্য নয়। আশা করছি, ফিফা সেই চুক্তিকে সম্মান করবে। যা বক্স মালিকদের ৯৯ বছরের জন্য সীমাহীন প্রবেশাধিকার দিয়েছে।’
২০২৬ বিশ্বকাপের ম্যাচ গড়ালে প্রথম স্টেডিয়াম হিসেবে তিনবার ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জন করবে অ্যাজতেকা স্টেডিয়াম। ১৯৭০ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপেও মাঠটিতে খেলা গড়িয়েছিল। রুয়ানোর দাবি, আগের দুটি বিশ্বকাপেও বক্স মালিকরা অধিকার বুঝে পেয়েছিলেন।
‘১৯৭০ বিশ্বকাপে কোনো সমস্যা ছিল না। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ফিফা আমাদের সরিয়ে দিতে চেয়েছিল, আমরা সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করি। তারা আমাদের অতিরিক্ত কোনো ফি দেয়া ছাড়াই আমাদের ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। সেই নজির রয়েছে।’
বক্সের উন্নয়ন এবং অন্যান্য সুবিধার বিনিময়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে আসন ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন সংগঠনটির বাইরের কিছু সদস্য। তাদের সাথে সূর মেলাতে আপত্তি রুয়ানোর। বলেছেন, ‘প্রত্যেকের নিজের সুবিধা দেখার অধিকার রয়েছে। অনেকে ছেড়েছে, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা হবে না। সেখানে আমার থাকার অধিকার আছে, কেউ আমাকে জোর করে বের করতে পারবে না। বিষয়টা এমন, কাউকে জোর করে নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার মতো।’
শিগগিরই বক্স সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন স্টেডিয়ামের মালিক এবং এমিলিও আজকাররাগা মিলমোর ছেলে এমিলিও আজকাররাগা জিন। বলেছেন, ‘সেই সময়ে বক্সগুলো বিক্রি করা আমার বাবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন পর্যন্ত বক্সের মালিকদের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা একটি সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।’