অভিবাসী শ্রমিক নিয়ে কাতারের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানান অভিযোগ। ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপে দর্শকদের আবাসন সুবিধা দিতে নতুন আরেক বিতর্কে জড়াল আয়োজক দেশটি। মহাযজ্ঞের সাক্ষী হতে দেশটিতে ঢল নামবে ফুটবলপ্রেমীদের। তাদের আবাসনের জন্য জোর করে দোহা থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে অভিবাসী শ্রমিকদের।
আয়োজক দেশটি অভিবাসী শ্রমিকদের উচ্ছেদ করতে রীতিমত জোর খাটাচ্ছে। উচ্ছেদ হওয়া ১২টি বিল্ডিংয়ের বাসিন্দাদের দাবি, বিনা নোটিশে কয়েকঘণ্টার মধ্যে রুমে তালা দিয়ে তাদের বের হয়ে যেতে বলা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়াদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও আফ্রিকান শ্রমিক বেশি।
ফুটবল উপভোগ করতে আসতে থাকা দর্শক-সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে এ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে কাতার, এমন ধারণা করা হচ্ছে। রাজধানী দোহায় ডজনের বেশি বাড়ি খালি করে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা তাই নতুন আবাস খুঁজতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন, কেউ কেউ ফুটপাতেও আশ্রয় খুঁজছেন। অমানবিক এ ঘটনা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই তাদের।
ইউনুস নামের বাংলাদেশি এক ড্রাইভার আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, দোহার আল মানসুরা এলাকা থেকে তাকে এ নিয়ে তিনবার উচ্ছেদ করা হল। শেষ তিন রাত নিজের গাড়িতেই কাটিয়েছেন।
‘প্রথম রাতে খুব গোলমাল হচ্ছিল। যাওয়ার কোনো জায়গাও নেই। বর্তমানে ট্রাকটি আমার জীবন হয়ে উঠেছে। যতক্ষণ না কোথাও যেতে পারছি— গাড়িটি রাখতে পারছি, ততক্ষণ এটা ছাড়ছি না।’
কাতার বিশ্বকাপ স্বত্ব পাওয়ার পর থেকেই সমকামী, কড়া আইন ও শ্রমিক ইস্যু নিয়ে নেতিবাচক আলোচনায় ছিল। দেশটিতে কাজ করা শ্রমিকদের সঙ্গে অসদাচরণ, বেতন বৈষম্য, উপহাস এবং কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিয়েও বাজে রেকর্ড আছে তেল নির্ভর দেশটির। আসছে ২০ নভেম্বর বৈশ্বিক আসর গড়ানোর আগে এসব ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই।
যদিও কাতারি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদের বিষয়টি অস্বীকার করছে। তারা বলছে, ভবনগুলো বসবাসের অনুপযোগী বলেই উচ্ছেদ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে নোটিশ দেয়ার কথাও বলছে কর্তৃপক্ষ। অভিবাসী শ্রমিকের বিকল্প এবং নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থার কথা জানাচ্ছে তারা।
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা অবশ্য এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজকরা সরকারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানাচ্ছে একটি মাধ্যম।